০৪ মে ২০২৪, শনিবার, ০৪:৩২:৪৪ অপরাহ্ন


বিশ্বকাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ
ক্রিড়া ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১১-২০২৩
বিশ্বকাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিশ্বকাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ


২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বৃহস্পতিবার মেলবোর্নের অ্যামি পার্কে এশিয়া অঞ্চলের ‘আই’ গ্রুপের হোম ম্যাচে ম্যাকলানের হ্যাটট্রিকে অস্ট্রেলিয়া ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথমার্ধে বিজয়ী দল ৪-০ গোলে এগিয়ে ছিল।

ফুটবলে অস্ট্রেলিয়ার সামনে বাংলাদেশ প্রায় শিশুই বলা চলে! ফিফা র‌্যাঙ্কিংই যার প্রমাণ। র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান যেখানে ২৭তম, সেখানে বাংলাদেশ রয়েছে ১৮৩তম স্থানে। এই দলটির কাছে লাল-সবুজরা হারবে, এটা অনুমেয়ই ছিল। তবে এতো বড় ব্যবধানে হারবে তা হয়তো ভাবেননি বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। ক্যাবরেরাকে হতাশ করে ফুটবলে বাংলাদেশের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যটা বেশ ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই ৫-০ গোলে হেরেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। তবে এবার অজিদের কাছে এমন হার দেখে মনে হয়েছে, ৩০ বছর পেছনেই পড়ে রয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। সর্বশেষ ৩০ বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজরা। যদিও আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার ৯-০ গোলে। ১৯৭৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও ১৯৮২ সালে ইরানের বিপক্ষে এই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। এছাড়া ১৯৭৫ সালে হংকংয়ে কাছে হারে ৯-১ ব্যবধানে।

শারীরিক উচ্চতা, সেট পিস ও স্কিলের সুবিধা নিয়ে সকারুজরা বৃহস্পতিবার ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশক চেপে ধরে। ম্যাচ শুরু মাত্র চার মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এসময় ক্রেগ গুডউইনের ফ্রি-কিকে হ্যারি সাটার লাফিয়ে উঠে হেডে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন (১-০)। সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতার অজি ডিফেন্ডারের সঙ্গে সেঁটে থাকা বাংলাদেশের ডিফেন্ডার তারিক কাজী কিছুই করতে পারেননি। বাংলাদেশ প্রথমার্ধে তিন থেকে চার বার প্রতিপক্ষের সীমানায় বল নিয়ে গেছে। একবার তো গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল। ১০ মিনিটে রাকিব হোসেন প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে শট নিলেও তা পোস্টের বাইরে জাল কাঁপিয়েছে এক অজি ডিফেন্ডারের বাধার মুখে। এরপর শুধু অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্যই দেখা গেছে। ২০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় স্বাগতিক দল। সতীর্থের নিচু ক্রসে বোরেল্লো ফাঁকায় পোস্টের সামনে থেকে আলতো প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান (২-০)। ৩৮ মিনিটে আবারও গোল পায় অস্ট্রেলিয়া। এসময় সতীর্থের উচুঁ পাসের বলে দীর্ঘদেহী মিচেল ডিউক জায়গায় দাঁড়িয়ে হেড করে দূরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন (৩-০)। মিনিট দুয়েক পর ফের গোল হজম করেন জামালরা। বোরেল্লোর শট পোস্টের নিচে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে ডিউক আলতো শটে গোল করলে ৪-০ এগিয়ে যায় অস্ট্যেলিয়া। এই ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের আরও তিনটি গোল করে অজিরা। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ কোচ ক্যাবরেরা খেলোয়াড় বদল করলেও ফল পাননি। তিনি শাকিল, মোরসালিনদের মাঠে নামিয়েও ম্যাচের চিত্র পাল্টাতে পারেননি। বলা যায় পুরো ম্যাচে স্বাগতিকদের আক্রমণের তোড়ে উড়ে গেছেন লাল সবুজের ফুটবলাররা। স্বাগতিক দলের বদলি ফরোয়ার্ড ম্যাকলারেন দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিকের দেখা পান। ৪৮ মিনিটে অস্ট্রেলিয়া করে পঞ্চম গোল। সতীর্থের নিচু ক্রসে বদলি ম্যাকলারেন আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন (৫-০)। বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলেও বলের নাগাল পাননি। ৬০ মিনিটে জামাল, রাকিব ও হাসান মুরাদের জায়গায় রবিউল, শাকিল ও রফিকুলকে মাঠে নামানো হয়। পরে নামেন শেখ মোরসালিনও। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো গোল হজম করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৭০ মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ করে অস্ট্রেলিয়া। মাসিমো লুংগোর শট গোলকিপার মিতুল ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। ফিরতি বলে টোকা দিয়ে গোল করতে ভুল করেননি ম্যাকলারেন (৬-০)। ৮৪ মিনিটে মিলারের নিচু ক্রসে ম্যাকলারেনের প্লেসিং শটে আসে সপ্তম গোল (৭-০)। ম্যাচের অন্তিম সময়ে বক্সের ভেতরে অনিলমে অবৈধভাবে বাধা দেন শাকিল। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি দেন। তবে মাসিমো লুঙ্গোর পেনাল্টি শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন গোলরক্ষক মিতুর মারমা। পুরো ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাথু রায়ানকে কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। বরং হেসে খেলেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সকারুজরা গোল উৎসব করে। ২১ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে লেবাননের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।