প্যালেস্তাইন ইস্যুতে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ ক্রমে ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকাজুড়ে। একের পর এক ক্যাম্পাসে পড়ুয়ারা ক্লাস বয়কট করে বিক্ষোভ আন্দোলনে শামিল হচ্ছে।
একাধিক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মার্কিন পুলিশ গত রাত পর্যন্ত ২২০০ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে। তাতেও আন্দোলনে ভাটা পড়েনি। বরং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। পড়ুয়াদের দাবি, ইজরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আছে এমন কোনও সংস্থার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক রাখা চলবে না। গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র বিরোধিতা করতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে।
এদিকে, চাপের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলেছেন। গত রাতে হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করে। তাতে তিনি ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানান। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকা কর্তৃত্ববাদী দেশ নয়। জোরপূর্বক কোনও প্রতিবাদ দমনের পক্ষে নই আমরা। তবে আমেরিকা আইনহীন দেশও নয়। সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
প্যালেস্তাইনের গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলের হামলার প্রতিবাদে মার্কিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভের সূচনা হয় গত ১৭-১৮ এপ্রিলের সন্ধিক্ষণে। বহু ক্যাম্পাস এই ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে পাল্টা ইজরায়েলের সমর্থনে ছেলেমেয়েরা পথে নামায়। দু-পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে বলপ্রয়োগ করতে হয়। একটি ক্যাম্পাসে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও মার্কিন পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ মোটেই গুলি চালায়নি। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একজন পুলিশের পিস্তল থেকে বুলেট বেরিয়ে যায়। তাতে কেউ হতাহত হননি। তবে মার্কিন আইন মেনে ঘটনার বিচার-বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে।
সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে বিক্ষোভ দমনে পুলিশ ৫০টির বেশি অভিযান চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২২০০ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু আমেরিকার নাগরিকেরাই নয়, সে দেশে পড়তে যাওয়া ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান-সহ বহু দেশের ছাত্রছাত্রী বিক্ষোভে শামিল হয়েছে। বিক্ষোভ ঘিরে চিন্তা বাড়ছে অন্যান্য দেশেও। ইরান, ইরাক এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিক্ষোভ সরাসরি সম্প্রচার করছে। বিক্ষোভের আঁচ কখন কোথায় কীভাবে জ্বলে ওঠে সেই চিন্তায় আছে প্রশাসন।