প্রথমে চুরির অভিযোগ তুলে গণধোলাই। তারপরে বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথা নেড়া করে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার পরের দিন সকালে বাড়ি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার। ১৩ বছরের ওই নাবালকের মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই সবং থানার দাঁররা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বড়চাহাড়া গ্ৰামে চাঞ্চল্য।
বুধবার সকালে ভাইয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের পর দাদা পরমেশ্বর নায়েক সবং থানায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। আর সেই অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দাঁররা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের শাসকদলের মনোরঞ্জন মাল নামে এক পঞ্চায়েত সদস্য সহ মোট ছয়জনকে বুধবার গ্ৰেপ্তার করে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার জেলা আদালতে হাজির করা হয়। বিচারকের নির্দেশে মনোরঞ্জন মাল-সহ আরও একজনের দুদিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। আর বাকি চারজনের জেল হাজত হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত নাবালকের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃতদের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিকে, তৃণমূলের সবং ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স বলেন, “দল এই ব্যাপারে প্রশ্রয় দেবে না। যারা অন্যায় করেছে তারা শাস্তি পাবেন। আমাদের কিছু বলার নেই। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশের তদন্তের উপর ভরসা রয়েছে।” জানা গিয়েছে মৃত নাবালক বাড়িতে একাই থাকত। তার বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক। ওড়িশায় কর্মরত। মা নেই। দাদা পরমেশ্বর নারায়ণগড়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার সবংয়ে এসেছিলেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বড়চাহাড়া গ্ৰামে একটি বাড়ি থেকে একটি হাঁড়ি চুরি যায়। সকলেরই সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই নাবালককের উপর। কারণ, এই নাবালকের বিরুদ্ধে গ্ৰামে আগেও চুরির অভিযোগ উঠেছিল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় নাবালককে ডেকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বড়চাহাড়া বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে একটি সেলুনে তাকে নেড়া করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন মালের নেতৃত্বে হয় বলে অভিযোগ। এদিকে, ওই ঘটনার পরদিন বুধবার সকালে এই নাবালকের মৃতদেহ বাড়িতে পাওয়া যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, নাবালক অপমান সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে। যদিও পুলিশ নাবালকের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা দায়ের করেছে।