২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৫:০১:৫৮ পূর্বাহ্ন


ইনসুলিন প্রয়োগ করে ১৭ জনকে খুন, ৩৬০ বছরের কারাদণ্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২৪
ইনসুলিন প্রয়োগ করে ১৭ জনকে খুন, ৩৬০ বছরের কারাদণ্ড ছবি: সংগৃহীত


মোট সতেরো জন। অস্ত্র, ইনসুলিন। অবিশ্বাস্য, তাই নয় কি? যে জীবনদায়ী হরমোনের ভরসায় দিন কাটে ডায়াবেটিস-আক্রান্ত রোগীদের, কার্যত সেই ইনসুলিনই হয়ে উঠল ঘাতক! প্রাণ গেল সতেরো জনের।

ঘটনা আমেরিকার পেনসিলভ্যানিয়া রাজ্যের। 

হিদার প্রেসডির বয়স ৪১। পেশায় নার্স। আগে বিভিন্ন সংস্থায় ছোটখাটো চাকরি করেছেন। কাজ করেছেন পশুচিকিৎসা-কেন্দ্রে। পরে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই নার্সের লাইসেন্স পান। তার ভিত্তিতে 'কোয়ালিটি লাইফ সার্ভিসেস' সংস্থায় নার্স হিসেবে কাজে যোগ দেন। নার্স হিসেবে পাঁচটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে দায়িত্বে ছিলেন হিদার। অভিযোগ, ২০২০ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পাঁচটি হাসপাতালের মোট বাইশজন রোগীর ওপর হিদার কোনো প্রয়োজন ছাড়াই ইনসুলিন প্রয়োগ করেন। বেশিরভাগ সময়েই এই ঘটনা ঘটত রাতে। যখন কর্মী কম থাকত বা নজরদারি একটু শিথিল হত। বেশিরভাগ রোগীই প্রথমবার ইনসুলিন প্রয়োগ হতেই মারা যান। বাকিদের অবস্থাও ক্রমশ শোচনীয় হতে থাকে। 

প্রথমে কেউই সন্দেহ করেনি। বেশিরভাগই ভেবেছিলেন, রোগীদের অবস্থা এমনিতেই খারাপ ছিল, আচমকা অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়েছে। যদিও হিদারের দায়িত্বে থাকা রোগীদের অনেকেরই আদৌ আশঙ্কাজনক অবস্থা ছিল না। কিন্তু তাতেও, শুরুতে ঘটনাটা ধরা যায়নি। পরে একজন রোগীর মৃত্যুর পরে পরিজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে সংস্থা। রেফারেল কোড ধরে বোঝা যায়, রোগী হিদারের অধীনে ছিলেন। খবর যায় পেনসিলভ্যানিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মিশেল হেনরির দফতরে। তদন্ত গড়াতেই বেরিয়ে আসে হাড়হিমকরা সত্য। দেখা যায়, মোট ১৭ জন রোগীর মৃত্যু আদৌ স্বাভাবিক বা অসুস্থতাজনিত নয়। বরং প্রায় সুস্থ রোগীদের নির্মমভাবে ইনসুলিন প্রয়োগ করে হত্যা করেন হিদার। 

পেনসিলভ্যানিয়ার আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন হিদার। কেন তিনি এরকম করলেন, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা যদিও এখনও কেউ দিতে পারেননি। রোগীর পরিজনরা কেউ বলছেন, হিদার খুনি, দৈত্য, বিকৃতমনস্ক। আদালত রায়ে হিদারকে তিন দফায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। তার ওপরে মোট ১৯ দফায় খুন ও খুনের চেষ্টার জন্য হিদারকে ৩৮০ থেকে ৭৬০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মিশেল হেনরি বলেছেন, 'আমরা হয়ত মৃতদের ফিরিয়ে আনতে পারব না, কিন্তু এই নার্স যাতে আর কোনওভাবে এই জঘন্য কাজ করার সুযোগ না পায়, সেটা আমরা সুনিশ্চিত করতে পারি।'