২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:১৫:০৭ অপরাহ্ন


অভিশপ্ত পুতুল দ্বীপ!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৭-২০২৩
অভিশপ্ত পুতুল দ্বীপ! ছবি: সংগৃহীত


ম্যাক্সিকো শহরের একেবারে দক্ষিণে রয়েছে সবুজে ঘেরা একটি দ্বীপ। কিছুটা দৃষ্টি মেললেই দেখা যায় দ্বীপটি বেশ আলো-ছায়া মাখা। অথচ দ্বীপে পা রাখলেই যেন একটা অদ্ভুত অজানা আতঙ্ক গ্ৰাস করতে ছুটে আসে। ভর দুপুরেও এই দ্বীপটি যেন হয়ে উঠে অশরীরের আকড়া।

কারণ দ্বীপে ঢুকলেই যেন গা ঝমঝমিয়ে উঠে। এই দ্বীপের নামই হয়ে গিয়েছে দ্য আইল্যান্ড অফ ডলস‌ সব গাছ থেকে ঝুলে রয়েছে ছোট, বড় এমন নানা চেহারার পুতুল। যদিও পুরোটাই শোনা কথা।

দ্বীপটি ঘিরে ছড়িয়ে থাকা নানা কাহিনী শোনা যায়। কথিত আছে এই দ্বীপে পুতুল নিয়ে খেলছিল তিন ম্যাক্সিকান শিশু। খেলার সময় হঠাত্‍ একটি শিশু উধাও হয়ে যায়, অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাশের একটি খালে সেই শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এই দ্বীপটি হয়ে ওঠে ভয়ংকর এক দ্বীপ। সবুজে ঘেরা দ্বীপ নিয়ে তৈরি হয় নানা অজানা কাহিনী।

জানা যায়, ডন জুলিয়ান সান্তানা বারেরা নামের এক ব্যক্তি দ্বীপটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। শিশুটির মৃত্যুর পর পরই তিনি ওই দ্বীপ মধ্যস্থ খালে একটি ভাসমান পুতুল দেখতে পান। তার মনে হয়েছিল, হয়তো মৃত শিশুটি ভেসে এসেছে। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেই পুতুলটিকে তিনি গাছে বেঁধে ঝুলিয়ে দেন। সেই থেকে শুরু, এরপর থেকেই তিনি গাছে নানা ধরণের পুতুল ঝুলিয়ে রাখতে থাকেন। সমাজ থেকে নিজেকে আলাদা করে দিয়ে তিনি থাকতে শুরু করেন এই নির্জন দ্বীপে।

যদিও অনেকের মতে জুলিয়ান যেন কোনও অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে চালিত হতে শুরু করেছিলেন। সারাদিনই বাচ্চা মেয়ের ফিসফিস শব্দ শুনতে পেতে শুরু করেন তিনি। এমনই কথিত রয়েছে, জীবনের বাকি ৫০ টা বছর ওই দ্বীপেই কাটান জুলিয়ান। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় থেকে এমন সব নানা পরিত্যক্ত পুতুল তুলে এনে দ্বীপের গাছগুলিতে ঝোলাতে শুরু করেন তিনি। কোনও পুতুল মুন্ডুহীন, কোনওটির আবার চোখ উপড়ানো, কারও নেই হাত-পা। আশ্চর্যজনকভাবে তার কিছু দিন পর জুলিয়ানকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ঠিক সেখানেই, যেখানে মেয়েটি ডুবে মারা গিয়েছিল। জুলিয়নের পরিবার অবশ্য পরবর্তীকালে এগুলো অস্বীকার করে। কিন্তু পুতুল দ্বীপের রহস্য আজও অজানা।

১৯৯০ সালে এই দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করেছে ম্যাক্সিকান সরকার। মানুষের ভয় দূর করার জন্যই দ্বীপটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পর্যটন এলাকা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখনও কি সেখানেই ঘুরে বেড়ায় অশরীরীরা কিংবা জুলিয়ন নিজেও? নাকি পুরো ব্যাপারটাই মানব মনের কল্পনা! কল্পনার রহস্যে ঘেরা এই দ্বীপে এখনও এমন নানা প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।