সম্প্রতি বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামার অনুমতি পেয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশি বশোংদ্ভূত হামজা চৌধুরী। এই ফুটবলারকে কেন্দ্র করে দেশে বইছে আনন্দের জোয়ার। হামজাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখছে বাফুফেও। বাফুফে প্রধান তাবিথ আউয়ালের স্বপ্ন হামজাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে অন্য প্রবাসী ফুটবলাররাও। আর তাতে করে আরও শক্তিশালী হবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
বাফুফে প্রধানের এই কথা দ্রুতই সত্যি হতে চলেছে। এবার জানা গিয়েছে জামাল ভূঁইয়া, তারেক কাজী ও হামজার পর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ফুটবলার জায়ান আহমেদ। দেশের জার্সিতে মাঠে নামার স্বপ্ন ২০ বছর বয়সী এই তরুণের।
আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় বেড়ে উঠা জায়ান জর্জ ম্যাশন বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়ে খেলেন। তার আগে দু বছর ছিলেন ভার্জানিয়া টেকে। এই বয়সে লেফট-ব্যাক ও উইং দুই পশিজনেই দারুণ পারদর্শিতা দেখিয়ে খেলে ফেলেছেন ইউরোপের বেশ কিছু টুর্নামেন্টে। সেখানেও বিশেষ ক্যাম্পও করেছেন তিনি। ২০২১ সালে ডেনমার্কে ক্যাপেলি স্পোর্ট কাপ, ২০১৭ সালে বার্সেলোনায় আবিইআর কাপে অংশ নিয়েছেন জায়ান।
তবে এসবের মাঝেও দেশের জার্সিতে খেলার স্বপ্ন তার। যেই স্বপ্নের কথা জানিয়ে জায়ান বলেন, ‘আমি একদিন বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি পরতে চাই। নিজেকে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই বাংলাদেশের ফুটবলার হিসেবে।’
২০০৪ সালে ভার্জিনিয়াতেই জন্ম জায়ানের। সেখানেই বেড়ে উঠলেও বাবা-মা দুই জনই বাংলাদেশি। তাই বাংলাদেশের প্রতি আলাদা টান ও ভালোবাসা জায়ানের। সময়-সুযোগ পেলে পরিবারের সঙ্গে আসেন বাংলাদেশে। গত পরশু (বৃহস্পতিবার) বাবার সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন সপ্তাহ দু’য়েকের জন্য।
পারিবারিক সফরে আসলেও এর মধ্যে জায়ানের পাসপোর্টের প্রক্রিয়া শুরু করতে চান বাবা শরীফ আহমেদ, ‘বাবা-মায়ের সূত্রে সে বাংলাদেশি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য খেলা এবং নানা কাজেই পাসপোর্ট প্রয়োজন। মূলত খেলার বিষয়ে তাগিদের জন্যই আমরা পাসপোর্টের প্রক্রিয়া শুরু করছি শিগগিরই।’
জায়ানের বাবা শরীফ আহমেদ আশি-নব্বইয়ের দশকের ফুটবলার। ইস্কাটন সবুজ সংঘের হয়ে প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগ খেলেছেন ২ বছর। অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলের স্কোয়াডেও ছিলেন। সেই স্কোয়াডে তার সঙ্গে ছিলেন দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার আরমান মিয়া, আলফাজ আহমেদরাও। ক্যাম্পে থাকলেও শরীফ আহমেদ টুর্নামেন্ট খেলতে সৌদি যেতে পারেননি শেষ পর্যন্ত।
ফলে লাল-সবুজ জার্সি না পরার আক্ষেপ এখনও তাকে পোড়ায়, ‘সৌদি সফর ও ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষা একই সময়ে পড়েছিল। পারিবারিক কারণে পরীক্ষা বেছে নেওয়ায় সৌদি যাওয়া হয়নি এবং বাংলাদেশের জার্সিও আর পরা হয়নি।’ তবে নিজে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলেও ছেলের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে দেখতে চান তিনি।