রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়ে গাড়িচাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল বছর বিরাশির বৃদ্ধের। প্রাথমিক ভাবে সেটিকে দুর্ঘটনা হিসাবে ধরা হলেও ক্রমে এর নেপথ্যের রহস্য প্রকাশ্যে আসে। আসলে সেটি যে নিছক কোনও দুর্ঘটনা নয়, পুরোপুরি পরিকল্পনা করে খুন, তদন্তে নেমে এই তথ্যই উঠে আসে পুলিশের হাতে। এই খুনের নেপথ্যে যে ৩০০ কোটির সম্পত্তি, সেটিও ক্রমশ প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের নাগপুরের।
পুলিশ সূত্রে খবর, শ্বশুর পুরুষোত্তম পুত্তেওয়ারের ৩০০ কোটির সম্পত্তির হাতাতে ভাড়াটে খুনিকে এক কোটি টাকা দিয়েছিলেন পুত্রবধূ অর্চনা মণীশ পুত্তেওয়ার। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, শ্বশুরের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হাতাতে ছক কষেছিলেন অর্চনা। কিন্তু কী ভাবে সেই খুনকে দুর্ঘটনা বলে দেখানো যায়, তারও ছক কষেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্বশুরকে খুন করার জন্য এক দুষ্কৃতীকে ভাড়া করেন অর্চনা। শুধু তাই-ই নয়, ওই দুষ্কৃতীকে বেশ কিছু টাকাও দিয়েছিলেন একটি পুরনো গাড়ি কেনার জন্য। সেই গাড়ি দিয়েই বৃদ্ধকে চাপা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন অর্চনা। ঘটনার দিন অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পুরষোত্তম। সেখান থেকে ফিরছিলেন। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পিছনে থেকে একটি গাড়ি এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল বৃদ্ধের। সেই ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসাবেই প্রাথমিক ভাবে মামলা রুজু করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে পুরুষোত্তমের পুত্রবধূর কিছু গতিবিধি অস্বাভাবিক ঠেকে পুলিশের চোখে। তার পর থেকে অর্চনার উপর নজরদারি বৃদ্ধি করে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, শ্বশুরকে খুন করার জন্য পরিবারের গাড়িচালক বাগড়ে এবং তাঁর দুই সঙ্গী নীরজ নিমচে এবং সচিন ধার্মিককে এক কোটি টাকা দিয়েছিলেন অর্চনা। অর্চনা-সহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। শহর উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা অর্চনা। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিজের প্রভাব খাটিয়ে অনেক দুর্নীতিমূলক কাজ করেছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি অর্চনার বিরুদ্ধে। তাঁকে ইতিমধ্যেই খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়িচালক এবং তাঁর দুই সঙ্গীকেও।