০৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ১২:১৬:০৬ পূর্বাহ্ন


কী করতে পারি তা পৃথিবীকে দেখানোর সংকল্প ছিল: সাকিব
খেলাখুলা ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-১০-২০২৩
কী করতে পারি তা পৃথিবীকে দেখানোর সংকল্প ছিল: সাকিব সংগৃহিত ছবি


২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন সাকিব আল হাসান। নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া সাকিব মনে করেন সেটিই ছিল এখন পর্যন্ত তার সেরা বিশ্বকাপ। 

সেই বিশ্বকাপের আগে সাকিব করেছেন কঠোর পরিশ্রম, ছিল পৃথিবীকে নিজের সামর্থ্য দেখানোর সংকল্প। 

আফগনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর আগে টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। 

সেখানে ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ও এ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছেন সাকিব। সবসময় জিততে চাওয়ার মানসিকতাই এই সাকিবকে তৈরি করেছে বলে মনে করেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘আমি কোনোমতেই হারতে চাই না। আমি সবসময় জিততে পছন্দ করি। এটা বন্ধুদের সঙ্গে গ্যারেজে বা গ্রামে খেলা হোক বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আমার মনে হয় জেতার মানসিকতাই আমাকে এভাবে তৈরি করেছে।’  

টেস্ট ও টি-২০ ফরম্যাটে নিজের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হলেও সাকিব জানান ওয়ানডেতে তিনি খেলেন সহজাত খেলাটাই। তাই ওয়ানডেটা তার পছন্দের ফরম্যাট।

সাকিব বলেন, ‘আমি এ ফরম্যাটটা ভালোবাসি। আমরা শুধু ওয়ানডে খেলেই বেড়ে উঠেছি। ছোট থেকেই আমি জানতাম এ ফরম্যাটটা কীভাবে খেলতে হয়। টি-২০ ফরম্যাটে আমাকে অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়, টেস্টে অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু ওয়ানডেতে আমার খুবই কম পরিবর্তন করতে হয়।’ 

২০১৯ বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছিলেন সাকিব। ৯ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি বোলিংয়ে শিকার করেছিলেন ১১ উইকেট। বাংলাদেশ যে তিন ম্যাচ জিতে তার তিনটিতেই ম্যাচসেরা হন সাকিব।

সেই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হওয়ার গল্পও শোনান সাকিব। কঠোর পরিশ্রম করার পাশাপাশি সাকিবের প্রস্তুতিতে ছিল শৃঙ্খলা। সঙ্গে ছিল কিছু করে দেখানোর জেদ। সাকিব বলেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপ ছিল আমার সেরা বিশ্বকাপ। আমি এর চাইতে ভালোভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারতাম না। আমি একটু ক্ষ্যাপাটে হয়ে গিয়েছিলাম। আমি যা যা করতে পারতাম সব করতে চেয়েছিলাম। আমি বিশেষ কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম।’  

‘আমি সেই তিন মাসে একদিনের জন্যও খাবার তালিকার বাইরে যাইনি। এমনকি রাত ১০টা বাজেও আমি জিমে গিয়েছিলাম, যেটা আমি আগে কখনো করিনি। অন্যদের থেকে কঠোরভাবে ট্রেনিং নিই এবং আমি এমন কিছু করতে তা পারি, যা পৃথিবীকে দেখানোর দৃঢ় সংকল্প ছিল।’  

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন সাকিব। স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭০-এর মতো রান করে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলাম।

এর পর আমি আর পেছনে ফিরে তাকাইনি। আমি প্রথম উইকেটটা পেয়েছিলাম এইডেন মারক্রামের। সেটা ছিল আমার ২৫০তম উইকেট। তবে আমি ছিলাম দ্রুততম, এটা আমি জানতাম না। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে বিশেষ কিছু করার আত্মবিশ্বাস আমার সবসময় ছিল। সৌভাগ্যবশত তা হয়েছে।’ 

২০১১ বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয়বার ওয়ানডে বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করতে যাচ্ছেন সাকিব। তবে অধিনায়কত্ব পাওয়াটা ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। জুলাইয়ে তামিম ইকবাল ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার পর দিন অবসর ভেঙে ফিরলেও অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন তিনি। 

এশিয়া কাপ দিয়ে ফের অধিনায়কত্ব শুরু করেন সাকিব। এভাবে অধিনায়কত্ব পাওয়া তার জন্য আদর্শ ছিল না বলে মনে করেন এ অলরাউন্ডার।

সাকিব বলেন, ‘ওয়ানডে একমাত্র ফরম্যাট যেখানে আমি লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করিনি। আমি ছয় বছর পর এ সুযোগ পেলাম। 

যেভাবে আমি সুযোগ পেয়েছি, সেটা আদর্শ ছিল না। আমি কখনই চাই না এটা এভাবে হোক। এটা আরও ভালোভাবে হতে পারত, যেটা আমাকে অনেক সাহায্য করত। কিন্তু এভাবেই উপমহাদেশে ব্যাপারগুলো ঘটে।’  

এ ছাড়া অন্তত আরও দুই বছর বাংলাদেশের হয়ে খেলার ইচ্ছা পোষণ করে সাকিব বলেন, ‘২০২৫ পর্যন্ত আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। এটি নিশ্চিত। এর পরও যদি আমি পারফর্ম করতে পারি, আমি ফিট থাকতে পারি, তা হলে আমি চালিয়ে যেতে পারি।’