দক্ষিন মেরুসাগর কি বরফ শূন্য হয়ে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। দেখা গেছে, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি বরফ গলেছে দক্ষিণ মেরুসাগরে। এমন চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মেরুসাগর বরফশূন্য হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, দক্ষিণ মেরুসাগরের উপর ভেসে থাকা বরফের চাদর ধীরে ধীরে গলতে শুরু করেছে। গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারিতে দেখা গিয়েছিল এই বরফের চাদর ১.৭৯ মিটার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে। আর এ বছর ২৫ ফেব্রুয়ারির রেকর্ড বলছে, প্রায় ১.৯২ মিটার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বরফ গলেছে। এত কম বরফ দক্ষিণ মেরুসাগরে দেখা যায়নি। এর জন্য বিশ্ব উষ্ণায়ণকেই দায়ী করা হচ্ছে।
সম্প্রতি গার্ডিয়ান পত্রিকায় মেরু অঞ্চল নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেও উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ মেরুসাগরে এত কম পরিমাণ বরফ আগে কখনও ছিল না। এই ঘটনায় অশনি সংকেত দেখছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, যত মেরু বরফ গলবে তত সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে। এছাড়াও সাগরে ভাসমান বরফ মেরুপ্রদেশের সামুদ্রিক ঝড়কে রুখে দেয়। বরফ গলার কারণে ওই অঞ্চল আর নিরাপদ থাকবে না। এর ফলে পরিবর্তন হবে স্থানীয় ভূপ্রকৃতির।
গবেষকরা বলছেন, রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু অঞ্চলগুলিতে। বিশেষত গত কয়েক বছরে মেরু প্রদেশে বড় বড় বরফের চাঁই অদৃশ্য হয়েছে। যার মানেই হল সেইসব হিমশৈল গলে সমুদ্রে মিশে গেছে। যার ফলে সমুদ্রের জলস্তরও বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফ গলার হার যত বাড়বে, তত বাড়বে পৃথিবীর উষ্ণতা। আর তত দ্রুত গতিতে গলতে থাকবে বরফ। অর্থাৎ গোটাটা চক্রবৃদ্ধিহারে এগোতে থাকবে। যার জেরে উদ্বেগজনক ভাবে উঠবে সমুদ্রের জল-স্তর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি মেরু অঞ্চলের হিমবাহ সম্পূর্ণ গলে যায়, তাতে গোটা পৃথিবীতে সমুদ্রের জলস্তর গড়ে ২৩ ফুট বাড়বে, যা সুমুদ্রোপকূলবর্তী বহু দেশের বহু শহরকে গ্রাস করবে। শহরগুলি চলে যাবে জলের তলায়।