প্রস্টেটে ক্যান্সার নিয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যুবক। কিন্তু সেই চিকিৎসা করতে গিয়ে তাঁর সমগ্র যৌনাঙ্গটিই অস্ত্রপচারের মাধ্যমে কেটে বাদ দিয়ে দেন চিকিৎসক । এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন রোগী। সেই ঘটনাতেই এবার অপ্রয়োজনীয়ভাবে যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিয়ে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে যুবককে ৬৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ঘটনাটি ঘটেছে ফ্রান্সে। ২০১৪ সালে কার্সিনোমায় আক্রান্ত হয়ে ন্যান্টেস ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি হন এক যুবক। তাঁর বয়স তখন ৩০ বছর। চিকিৎসকরা দেখেশুনে জানান, প্রস্টেটের আবরণী কলায় যে টিউমার রয়েছে, তা অস্ত্রোপচার করে বাদ দিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। তাঁরা রোগীকে আশ্বাস দেন, এমন ভাবেই অস্ত্রোপচার করা হবে, যাতে তাঁর পুরুষত্বহানি না ঘটে।
সেই মতোই অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যায়, অস্ত্রপচারের পরেও নির্মূল হয়নি ক্যান্সার। সুস্থ হওয়ার বদলে যুবকের সমগ্র যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে মারণ রোগ। তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয় রোগীর যৌনাঙ্গে। ওই যুবক জানিয়েছেন, একসময় এমন অবস্থা হয়েছিল যে তিনি নিজেই যৌনাঙ্গ কেটে ফেলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী সেই সময় আটকান স্বামীকে।
কিন্তু তাতে অবস্থা আরও খারাপ হতে শুরু করে। টিউমার আকারে ক্রমশ বাড়তে থাকে। চিকিৎসকরা জানান, যৌনাঙ্গটি কেটে বাদ দিলেই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। এমন প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে রাজি হননি রোগী। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, যৌনাঙ্গটি বাদ না দিলে তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। কার্যক্ষেত্রে সত্যিই ওই যুবকের অণ্ডকোষগুলি রেখে যৌনাঙ্গটি সম্পূর্ণভাবে কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।
এতেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন যুবক। তাঁর দাবি, যৌনাঙ্গ বাদ দিয়েও ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যেত। তাঁর নিম্নাঙ্গে আর কোনওরকম অনুভূতি নেই, দাবি রোগীর।
এরপরেই ন্যান্টেস আদালতে হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আদালত জানায়, সত্যিই অপ্রয়োজনীয়ভাবে যুবকের যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কমিয়ে দেন বিচারপতি। ন্যান্টেস হাসপাতালকে আদালত নির্দেশ দেয়, ওই যুবককে ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় মূল্যে প্রায় ৬৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
যদিও এতে খুশি নন রোগীর আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, এতে তাঁর মক্কেলের মানসিক ক্ষতির কথা ভাবা হয়নি। তবে বর্তমানে ওই যুবক ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।