২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০১:৪৪:২২ পূর্বাহ্ন


১৯৫০ বিশ্বকাপ: ব্রাজিলের দম্ভ চুরমার করে দেয় উরুগুয়ে
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৮-২০২২
১৯৫০ বিশ্বকাপ: ব্রাজিলের দম্ভ চুরমার করে দেয় উরুগুয়ে ফাইল ফটো


১৯৫০ বিশ্বকাপে অতি আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিলের দম্ভ চুরমার করে উরুগুয়ে। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ হাতছাড়া করার কষ্ট মেনে নিতে না পেরে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছিল সেই দলের কৃষ্ণাঙ্গ গোলরক্ষককে। মৃত্যুর আগপর্যন্ত যার সঙ্গী হয়েছিল সেলেসাওদের একরাশ ঘৃণা।

লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ফুটবলটা রীতিমতো ধর্মে পরিণত হয় ব্রাজিলে। এ দেশে জনপ্রিয়তা এতটাই বাড়ে যে, শিশু থেকে শুরু করে বুড়োদের মুখে মুখেও থাকত ফুটবলের কথা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে লাতিন আমেরিকায় প্রথম বিশ্বকাপ আসর। স্বাগতিক ব্রাজিল তখন কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দলটি, গোটা টুর্নামেন্টে আধিপত্য রেখে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে পা রাখে।

রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে উরুগুয়ের বিপক্ষে ড্র করলেই শিরোপা নিশ্চিত। মারাকানা স্টেডিয়ামে উপস্থিত লাখ দুয়েক ব্রাজিলিয়ান সমর্থক। ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত যাদের গগনবিদারী চিৎকারে অন্য কিছু শোনাই কঠিন ছিল।

তবে বিপত্তিটা ঘটান অ্যালসিডেস ঘিঘিয়া। ডান দিক থেকে উরুগুয়ের এ উইঙ্গারের আক্রমণ বুঝে উঠতে পারেননি ব্রাজিলের গোলরক্ষক মোয়াসির বারবোসা। ক্রস সামলাতে ডান দিকে ঝুঁকে গিয়েছিলেন, তবে ক্রস না করে গোল করা হয় ডিরেক্ট শটে।

বারবোসার এক ভুলে শিরোপা হাতছাড়া হয় ব্রাজিলের। মারাকানা পরিণত হয় শোকসভায়। যে শোক ভুলতে শূলে চড়ানো হয় কৃষ্ণাঙ্গ গোলরক্ষককে। অথচ তার হাতেই বছরখানেক আগে কোপা জিতেছিল সেলেসাওরা।

পঞ্চাশের শাস্তি বহাল ছিল পরের ৫০ বছরে। মারাকানা ট্র্যাজেডির ৪৩ বছরেও ব্রাজিলের কোনো ম্যাচে ধারাভাষ্য করার সুযোগ দেয়া হয়নি বারবোসাকে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ড্রেসিংরুমে ঢুকতে চাইলেও ফিরিয়ে দেয়া হয় অপয়া মনে করে।

ব্রাজিলের রাস্তায় প্রতিনিয়তই শিকার হতে হয়েছে বর্ণবাদী বৈষম্যের। তাকে উদ্দেশ্য করে সুপারমার্কেটে এক নারী নিজের সন্তানকে বলেছিলেন, 'দেখো দেখো, ওই লোকটাই আমাদের কাঁদিয়েছিল।'

বারবোসা ছিলেন সেই ব্রাজিল দলের অন্যতম তারকা। সমসাময়িক গোলরক্ষকদের মধ্যেও সেরা। তবে ১৬ জুলাইয়ের ট্র্যাজেডি তাকে পরিণত করেছিল খলনায়কে। মৃত্যুর আগপর্যন্ত সে আক্ষেপ তাকে পুড়িয়েছে।

ব্রাজিলে জেল খাটার সর্বোচ্চ সময়সীমা ৩০ বছর। তবে আমার ক্ষেত্রে তা চলছে ৫০ বছর ধরে। ২০০০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো মারা যান বারবোসা। অনেকের মতে, তার প্রথম মৃত্যুটা ঘটেছিল মারাকানা ট্র্যাজেডিতে।