মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবে ২০২৪ সালে ১০১ জন বিদেশী নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। যা দেশটির ইতিহাসে এক বছরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যা। এই পরিসংখ্যান ২০২৩ এবং ২০২২ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি। ওই বছরগুলোতে ৩৪ জন করে বিদেশী নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, মাদক-সম্পর্কিত অপরাধের কারণে এর মধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এই বছরের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত ছিলেন। সৌদি আরব ২০২৪ সালে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ৯২টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে, যার মধ্যে ৬৯ জনই ছিলেন বিদেশী।
ইউরোপীয়-সৌদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস (ইএসওএইচআর) অভিযোগ করেছে যে, বিশেষত বিদেশী নাগরিকরা ন্যায়বিচারের অভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
সংস্থাটির আইনি পরিচালক তাহা আল-হাজি বলেন, বিদেশীরা প্রায়শই বড় মাদক ব্যবসায়ীদের শিকার হয়। তাদের গ্রেফতারের মুহূর্ত থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা পর্যন্ত তারা ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবার এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মৃত্যুদণ্ড বিরোধী সংস্থা 'রিপ্রিভ' এর সদস্য জিদ বাসিউনি এটিকে 'অভূতপূর্ব মানবাধিকার সংকট' বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া বিদেশী নাগরিকদের পরিবারগুলো খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এ বছর পাকিস্তানের ২১ জন, ইয়েমেনের ২০ জন, সিরিয়ার ১৪ জন, নাইজেরিয়া থেকে ১০ জন, মিশরের ৯ জন, জর্ডানের ৮ জন এবং ইথিওপিয়ার ৭ জন নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এছাড়াও সুদান, ভারত ও আফগানিস্তানের ৩ জন এবং শ্রীলঙ্কা, ইরিত্রিয়া ও ফিলিপাইনের একজন করে নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।