২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০১:০৯:০০ অপরাহ্ন


পুঠিয়ায় ভুয়া চিকিৎসকের অনুসন্ধানে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা!
মেহেদী দাম (পুঠিয়া প্রতিনিধি):
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১১-২০২৪
পুঠিয়ায় ভুয়া চিকিৎসকের অনুসন্ধানে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা! পুঠিয়ায় ভুয়া চিকিৎসকের অনুসন্ধানে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা!


রাজশাহীর পুঠিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো গ’ড়ে উঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। অতীতে ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে অনেক! এমনকি ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু মানুষ। এবার ভুয়া ডাক্তারের অনুসন্ধানে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি এবং মারধরের মুখে পড়েছেন উপজেলার কয়েকজন সাংবাদিক। এই ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে পুঠিয়া থানায় একটি জি.ডি করেছেন সাংবাদিকরা।

জানা গেছে, বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক ‘সময়ের আলো’ ও রাজশাহী স্থানীয় দৈনিক ‘উত্তরা প্রতিদিন’ পত্রিকার পুঠিয়া উপজেলা প্রতিনিধি মো. রকিবুল হাসান এবং দৈনিক ‘রাজশাহী সংবাদ’ পত্রিকার পুঠিয়া প্রতিনিধি আবু হাসাদ কামাল রোগী সেজে চিকিৎসা সেবা নিতে যান সাথী ডায়াগনস্টিক ও কনসাল্টেশন সেন্টারে। 

পরে সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন সদস্য ও আরও ক’জন সাংবাদিক হাজির হয়ে চিকিৎসকের পরিচয় জানতে চান। সে সময় সেখানে দেখা যায় একজন পুরুষ ও এক নারী রোগীকে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন মিন্টু নামের এক ব্যক্তি। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিক ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের জানান তিনি ডাক্তার নন। সেসময় তিনি নিজেকে ডাক্তারের একজন সহকারী ও পরামর্শক হিসেবে পরিচয় দেন।

ঘটনার খবর পেয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ. কে. এম. নূর হোসেন নির্ঝর ও পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলামিন সরকার (ভারপ্রাপ্ত) উপস্থিত হয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

ঐ ঘটনার পর থেকে সাংবাদিকদের মিথ্যে মামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার প্রতিবাদে পুঠিয়া থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি (জি.ডি) করেন সাংবাদিকরা।

অপরদিকে সাথী ডায়াগনস্টিক ও কনসাল্টেশন সেন্টারের মালিক ও পরিচালক মিন্টু এবং সেখানে রিসিপশনে কর্মরত আবু সায়েম আব্দুল্লাহ্ ও ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক রুবেল মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় জি.ডি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, কয়েকজন সাংবাদিক থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ. কে. এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, পুঠিয়া পৌর সদরে কৃষ্ণপুর এলাকায় সরফরাজ মিন্টু নামের এক ব্যক্তি চিকিৎসক পরিচয়ে সেবা দিয়ে আসছিলেন। যদিও তার চিকিৎসা বিষয়ে কোনও ডিগ্রি নেই। এছাড়া রোগী দেখার জন্য ২ শত টাকা করে নিতেন। এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে তিনি এ ধরণের কাজ করবেন না বলে মুচলেকাও দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে বেশ কিছু ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টি আমি জানি না। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।