২৪ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৭:২৭ অপরাহ্ন


পূথিবীর শান্তিপূর্ণ যে ৬টি দেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১০-২০২৪
পূথিবীর শান্তিপূর্ণ  যে ৬টি দেশ পূথিবীর শান্তিপূর্ণ যে ৬টি দেশ


বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা অশান্তির জের পড়ছে পর্যটন শিল্পেও। বিশ্বের কয়েকটি শান্তিপ্রিয় দেশ সম্পর্কে কথা বলা যাক। ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিকস্ অ্যান্ড পিস্ (IEP) দ্বারা তৈরি গ্লোবাল পিস্ ইনডেক্স (GPI) বা বিশ্বব্যাপী শান্তির জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পরিমাপ অনুযায়ী, পর্যটন স্থল হিসেবে এই দেশগুলি যেমন আকর্ষণীয়, তেমনই পর্যটকদের জন্য নিরাপদ। পর্যটকদের সদাহাস্য মুখে স্বাগত জানান এই সব দেশের নাগরিকরা।

আইসল্যান্ড:

গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ হলো আইসল্যান্ড। এবং তালিকার প্রথম স্থানটি এই দেশ ধারাবাহিকভাবে দখল করে রেখেছে। এই দেশে অপরাধের হার অত্যন্ত কম। সামরিক বাহিনীর অনুপস্থিতি সত্ত্বেও এই দেশে শান্তি বিরাজমান। এবং মানবাধিকারের প্রতি দেশবাসীর অঙ্গীকারই দেশের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাহায্য করে। আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোনও তুলনা হয় না। উষ্ণপ্রস্রবণ থেকে শুরু করে জলপ্রপাত, নাগরিকদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে এই দেশ আদর্শ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও রাজধানী রেকজাভিক, থিংভেলির জাতীয় উদ্যান, গালফস্ ঝরনা, আগ্নেয়গিরি হ্রদ কেরিও ক্রেটার এখানকার দর্শনীয় স্থান।

আয়ারল্যান্ড:

বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে আয়ারল্যান্ডও। অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক দৃশ্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতি এই দেশের প্রধান আকর্ষণ। এ দেশে অপরাধের হার অত্যন্ত কম। হিংসতার অনুপস্থিতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে আয়ারল্যান্ড ধারাবাহিকভাবে প্রথম সারিতে অবস্থান করে আসছে। আয়ারল্যান্ডের আকর্ষণীয় স্থানগুলি হল ক্লিফস্ অফ মোহের, কিলমাইনহাম গাওল মিউজিয়াম, কিলার্নি ন্যাশনাল পার্ক এবং আরান দ্বীপপুঞ্জ। দেশটি তার মিশুকে নাগরিক, ঐতিহ্যবাহী সমগীত এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনের জন্য পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

অস্ট্রিয়া:

অস্ট্রিয়ার সুন্দর অ্যালপাইন দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী শাস্ত্রীয় সংগীত এবং সুসংরক্ষিত স্থাপত্যের কারণে পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দেশের কঠোর নিরাপত্তা এবং কম অপরাধপ্রবণতা গর্ব করার মতো। তাই গ্লোবাল পিস ইনডেক্সের শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রিয়ার নাম।

এখানকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কফি হাউস এবং জাদুঘরগুলি বিশ্ববিখ্যাত। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক এদেশে যান। অস্ট্রিয়ায় গেলে ভিয়েনার ঐতিহাসিক কেন্দ্র, সালজবার্গ, সেন্ট স্টিফেন'স্ ক্যাথিড্রাল এবং শোনব্রুন প্যালেস দেখতে ভুলবেন না।

নিউজিল্যান্ড :

মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সমৃদ্ধ মাওরি সংস্কৃতির জন্য পরিচিত, নিউজিল্যান্ড যেন শান্তির আলোকবর্তিকা। প্রাণবন্ত সামাজিক কাঠামো, অপরাধের কম হার এবং পরিবেশ সংরক্ষণের উপর এই দেশের সরকার এবং নাগরিক সমাজ বেশ নজর দেয়। পর্যটকরা এখানকার বে অফ আইল্যান্ডস্, মিলফোর্ড সাউন্ড, কেপ রিঙ্গা এবং অকল্যান্ড ঘুরে দেখেন।

সিঙ্গাপুর :

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি তার আধুনিকতা, পরিচ্ছন্নতা এবং বহুজাতিক সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এখানকার বাসিন্দারা বিদেশিদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে এটি পঞ্চম স্থানে রয়েছে। কঠোর আইন ও প্রবিধান, অপরাধের হার কম এবং উচ্চস্তরের জনশৃঙ্খলা এই দেশে বর্তমান। শুধু তাই নয়, এ দেশের খাবারও দারুণ সুস্বাদু ও লোভনীয়। প্রায় সারাবছর ধরেই এখানে নানা উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এখানকার দর্শনীয় এবং জনপ্রিয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে গার্ডেন বাই দ্য বে, ইউনিভার্সাল স্টুডিও অফ সিঙ্গাপুর, মেরলিয়ন পার্ক, সিঙ্গাপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন, জুরং বার্ড পার্ক ইত্যাদি।

সুইজারল্যান্ড:

সুইজারল্যান্ড প্রায়শই তার প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রশংসিত হয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ এবং সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে একটি। আল্পস্ এবং আদিম হ্রদ সহ অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ভ্রমণকারীদের আকর্ষণ করে। সুইজারল্যান্ডের কিছু জনপ্রিয় স্থানের মধ্যে অন্যতম হল ম্যাটারহর্ন, দ্য রাইন ফলস, ক্রেক্স ডু ভ্যান, সুইস মিউজিয়াম অফ ট্রান্সপোর্ট, জুংফ্রাউজোচ। সুইজারল্যান্ডের অপরিবর্তনশীলতা এবং জীবনের মান বার বার প্রমাণ করে যে, এটি বিশ্বের শান্তিপূর্ণ গন্তব্যস্থানগুলির মধ্যে একটি।