২৭ Jul ২০২৪, শনিবার, ০২:০৭:৩৩ অপরাহ্ন


সিরাজগঞ্জে হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছে বহু পরিবার
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০২-২০২৪
সিরাজগঞ্জে হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছে বহু পরিবার ছবি: সংগৃহীত


সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছে বহু পরিবার। কম পুঁজি বিনিয়োগে হাঁসের খামার করে সচ্ছলতা ফিরেছে অনেকের সংসারে। এ কারণে হাঁস পালনে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। 

জানা গেছে, তাড়াশে ৩০০ বেশি হাঁসের খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় ৪ লক্ষাধিক হাঁস রয়েছে। তবে বন্যার সময় হাঁস পালন কমে যায়।

পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের লিটন আহাম্মেদ বলেন, স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী এক সন্তানসহ তিনজনের পরিবার আমাদের। অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে এক সময় অপারগ হয়ে পড়ি। তারপর সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ৭০০ হাঁসের বাচ্চা কিনে বড় করি। এখন ৭০০ হাঁস রয়েছে খামারে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ডিম দেয় হাঁসগুলো। এক হালি ডিমের দাম ৮০ টাকা। এখন ঋণ ও ধার-দেনা শোধ করে দিয়েছি। আমাদের সংসারে অভাব নেই।

বিধবা নাছিমা খাতুন জানান, তাদের ভূমিহীন পরিবার। স্বামী ও তিনি কৃষি শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু তার স্বামী মারা যাওয়ার পর একার রোজগারে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারপর তার বড় ছেলেকে সাথে নিয়ে হাঁস পালন শুরু করেন। এখন ৫০০ হাঁস রয়েছে খামারে। হাঁসগুলো প্রতিদিন প্রায় ৩০০ ডিম দেয়। 

ডিমের দামও ভালো। হাঁস পালন করে কয়েক বিঘা কৃষি জমি বন্ধক নিয়েছেন। নিজেরা সেই জমিতে চাষাবাদ করেন। সচ্ছলতা ফিরেছে তাদের সংসারে। 

এদিকে পৌর এলাকার কহিত গ্রামের রুহুল আমীন বলেন, আমি ৩১ বছর ধরে হাঁস পালন করছি। কখনো লোকসান হয়নি। তাড়াশ বিল এলাকা। এজন্য হাঁস পালন বেশ লাভজনক। বন্যার সময় শামুক, ঝিনুক, শ্যাওলা ও লতাপাতা খেতে পায়। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে পড়ে থাকা ধান খায়। বাড়তি খাবার তেমন লাগে না। এসব সুবিধার জন্য হাঁস পালনে আগ্রহ বাড়ছে প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে।  

সগুনা ইউনিয়নের মাকড়শন গ্রামের জয়নাল আবেদীন লাবু বলেন, তিনি ১০ বছর ধরে চাষাবাদের পাশাপাশি হাঁস পালন করছেন। বছরে তিন থেকে সারে তিন লাখ টাকা বাড়তি আয় হচ্ছে হাঁস পালন করে।      

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলাম বলেন, তাড়াশে হাঁস পালনে অধিক সুবিধা রয়েছে। হাঁস স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা পছন্দ করে। এরকম জায়গা তাড়াশের খাল-বিলে অভাব নেই। তাছাড়া, পাঠপর্যায়ে খামারিদের ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়ে থাকে। এজন্য হাঁসের রোগব্যাধি হয় না বললেই চলে।