ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় অবিরাম যুদ্ধ বন্ধে এবার নিজের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে সর্বোচ্চটা ব্যবহার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নজিরবিহীনভাবে জাতিসংঘ সনদের ‘আর্টিকেল ৯৯’ প্রয়োগ করেছেন তিনি। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদকে গাজায় সহিংসতা বন্ধে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানালেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
আর্টিকেল ৯৯ জাতিসংঘ মহাসচিবকে এই বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, কোনো বিষয় বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির সম্মুখীন করছে, যদি জাতিসংঘ মহাসচিব এমনটা মনে করেন তাহলে তিনি এ বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে (আর্টিকেল ৯৯) চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এতে তিনি বলেছেন, ইসরায়েল ও দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এখন যে পরিস্থিতি তাতে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিরুদ্ধে থাকা হুমকিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আর্টিকেল ৯৯ প্রয়োগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে গুতেরেস বলেন, ‘অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে কোনো এলাকাই এখন আর নিরাপদ নয়। গাজায় পুরো মানবিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার জোরালো আশঙ্কা আছে। পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে।’
তার ভাষায়, ‘ফিলিস্তিন তো বটেই, গোটা বিশ্বের শান্তি ও সুরক্ষার ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতি যেকোনও মূল্যে এড়াতে হবে।’
২০১৭ থেকে গুতেরেস জাতিসংঘের মহাসচিব পদে আছেন। এই প্রথম তিনি জাতিসংঘের চার্টারের আর্টিকেল ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন।
এদিকে, উত্তর গাজাকে ধূলিসাৎ করার পর দক্ষিণ গাজাতেও একই নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। হাসপাতাল-স্কুলে নির্বিচার হামলায় শতাধিক জাতিসংঘ কর্মী নিহত হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।
চরম অমানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় গত ১৮ অক্টোবর থেকে বার বার যুদ্ধবিরতি, শান্তির আহ্বান জানিয়ে এসেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধাপরাধ করছে এমন অভিযোগ করছে আন্তর্জাতিক মহলের সবচেয়ে বড় সংস্থাটি। কিন্তু ইসরায়েল এসবে কর্ণপাত তো করেইনি বরং জাতিসংঘভুক্ত সংস্থাগুলোকে একের পর এক ফিলিস্তিনে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্বর) পশ্চিম তীরে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়ক লিন হিসটিংসের ভিসা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।