২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:৩৩:০২ পূর্বাহ্ন


অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১২-২০২৪
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন


সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্লোরিডার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে ডজনখানেক বিলাসবহুল কন্ডো, হোটেল এবং অন্যান্য বহুতল ভবন আশঙ্কাজনক হারে দেবে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গোল্ডেন বিচ থেকে মিয়ামি বিচ পর্যন্ত মোট ৩৫টি ভবন প্রায় তিন ইঞ্চি পর্যন্ত দেবে গেছে। এই ভবনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো রিটজ-কার্লটন রেসিডেন্সেস, ট্রাম্প টাওয়ার-থ্রি, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল বিচ রিসোর্টস, আইকনিক সার্ফ ক্লাব টাওয়ারস।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এর মূল কারণ হলো এসব বহুতল ভবন নির্মাণকালে সৃষ্ট উচ্চমাত্রার কম্পন। এ ধরনের কম্পন মাটির কণা সংকুচিত করে, এতে ভূমি ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে। গবেষণার সহ-লেখক ফক অ্যামেলুং জানান, মাটিতে চাপ পড়লে এটি আরও নিচে দেবে যেতে থাকে। তবে বিশেষ চমকপ্রদ বিষয় হলো, ভবন নির্মাণের সময় বা ঠিক পরেই এমন দেবে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক হলেও, এটি বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকায় একটি বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দেখা গেছে। খবর সিএনএনের।

২০২১ সালের জুনে সার্ফসাইড অঞ্চলে 'চ্যামপ্লেইন টাওয়ার' খানিকটা হেলে পড়ার (কাত হওয়া) পর গবেষকরা এই বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন। কাত হওয়ার আগে ওই ভবনে ভূমি তলিয়ে (দেবে) যাওয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি, তবে কাছাকাছি সমুদ্রের তীরবর্তী কয়েকটি ভবনে এবং তীরবর্তী এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে। উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের ছবি ব্যবহার করে গবেষকরা ভবনের সুক্ষ্মতম পরিবর্তন নিরীক্ষণ করেছেন। তারা ভবনের ব্যালকনি ও ছাদের এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটের মতো নির্দিষ্ট অংশ ট্র্যাক করে মাটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছেন।

গবেষণায় জানা গেছে, সানি আইলস বিচের এর উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলে প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন দেবে যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ ভবন গত এক দশকে নির্মিত হয়েছে।

নির্মাণকালের কম্পনের পাশাপাশি, দৈনন্দিন জোয়ারের ফলে পানির চলাচলও ভূমি সঙ্কুচিত করতে পারে। এছাড়া অত্যাধিক ভারী ভবনের ওজন, মাটির প্রাকৃতিক সঙ্কোচন এবং নতুন উপকূল তৈরি করতে পেছনে ফেলা মাটি ভূমি বসে যাওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে।

গবেষকরা সতর্ক করেছেন, মিয়ামির ভূমি একইসঙ্গে দেবে যাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সমস্যার মুখোমুখী। এই দুইটি মিলে উপকূলীয় এলাকায় বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং ভাঙনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

ভার্জিনিয়া টেকের ভূতত্ত্ববিদ মনুচের শিরজাই বলেন, 'যে কোনো পরিবর্তন, হোক তা ভূমি দেবে যাওয়া বা সমুদ্রপৃষ্ঠ বাড়া- এটি অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।' গবেষণার এমনসব ফলাফল ভবিষ্যতে আরও গভীর পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে। মিয়ামির মতো উপকূলীয় শহরগুলোর জন্য এই সমস্যাগুলো বড় ধরনের বিপদ হিসেবে দেখা দিতে পারে।