০৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৪৪:২০ অপরাহ্ন


ডেঙ্গু জ্বরে ভিটামিন-ডি
স্বাস্থ্য ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-১০-২০২৩
ডেঙ্গু জ্বরে ভিটামিন-ডি সংগৃহিত ছবি


এ মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু জ্বর। এ জ্বরে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এ ক্ষেত্রে রক্তনালি থেকে প্লাজমা বের হয়ে যায়। এতে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে কার্যকারিতা হারিয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপ আবিষ্কৃত হয়েছে-১,২,৩ এবং ৪। একটি দিয়ে আক্রান্ত হলে সেটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি মানে সে ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকরী শক্তি তৈরি হয়ে যায়।

মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে অতিরিক্ত ডেঙ্গু ভাইরাস লোডের কারণে বিভিন্ন কোষ (টি সেল, মনোসাইট/ ম্যাক্রফেজ, অ্যান্ডথেলিয়াল সেল) থেকে অতিমাত্রায় সাইটোকাইন নিঃসরিত হয়। আর এ প্রো-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনস ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও শক সিনড্রোম হওয়ার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। ভিটামিন ডি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও দ্রুত রোগমুক্তিতে ভূমিকা রাখে। ডেঙ্গু জ্বরের জটিলতা সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ে তা কমাতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ভিটামিন ডি মানবদেহে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোষের পরিমাণ কমায়, যা প্রকারান্তরে বিভিন্ন প্রো-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনসের নিঃসরণ কমায়। ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা হ্রাস পায়। এছাড়া ভিটামিন ডি ম্যাক্রফেজ নামক কোষের পৃথককরণে সাহায্য করে; যা শরীরে দ্রুত ভাইরাস বৃদ্ধি হতে বাধা দেয় এবং ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য, আমাদের দেশের প্রায় ৭৫-৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ভিটামিন ডির স্বল্পতায় ভুগছেন।

বাস্তবতা হলো, দেশে এখন ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা অনেক বেশি। অন্যদিকে আমাদের দেশের মানুষের ভিটামিন ডি সার্বিকভাবে কম। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে পরিচালিত দুটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে দৈনিক ৪০০০ ইউনিট হারে ১০ দিন অথবা এক ডোজ ২০০০০০ ইউনিট ভিটামিন ডি দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় কমেছে। যেহেতু ভিটামিন ডি ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে, তাই আমাদের লক্ষ্য হবে, ডেঙ্গু আক্রান্ত সবার শরীরে যেকোনো উপায়ে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি’র জোগান নিশ্চিত করা।

লেখক : অধ্যাপক, মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী, ঢাকা।