সারাদিন উপোস থেকেছেন। নিয়ম মেনে পুজো দিয়েছেন। খরচাও করেছেন যথেষ্টই। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। হাজারবার ডাকলেও মনের ইচ্ছা পূরণ করেননি ভগবান। তাই রাগে অভিমানে শিবলিঙ্গ নিয়েই চম্পট দিয়েছেন যুবক।
চেয়েছিলেন একটা বিয়ে হোক। তার জন্য যে যা বলেছে তিনি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। গোটা শ্রাবণ মাস জুড়ে শিবের মাথায় জল ঢেলেছেন। মন্দিরে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থাও করেছেন বহুবার। কিন্তু কিছুতেই কোনও লাভ হয়নি। এত পুজোআচ্ছা সত্ত্বেও ভগবান যুবকের বিয়ের শখ মেটাননি। তাই রাগের বশে মন্দিরের শিবলিঙ্গটাই চুরি করলেন তিনি।
ঘটনাটি যোগীরাজ্যের। সেখানকার কৌশাম্বী জেলার বিখ্যাত এক শিব মন্দিরে ঘটেছে এই কাণ্ড। প্রতিদিন সকালে মন্দিরের দরজা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এদিনও তেমনটাই হয়েছিল। কিন্তু এদিন মন্দিরে ঢুকেই চোখ কপালে ওঠে সকলের। সব আছে শুধু গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গটি নেই। তক্ষনি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। স্থানীয় লোকজনও মন্দিরে ভিড় জমাতে শুরু করেন। সাধারণ চুরি হলে মন্দিরের অন্যান্য জিনিসও হারানোর সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু স্রেফ শিবলিঙ্গ চুরি হওয়ায়, ঘটনাটিকে স্বাভাবিক বলে মানতে চাননি কেউই। এদিকে আরাধ্য মন্দির থেকে উধাও হয়ে যাওয়া রীতিমতো অমঙ্গলের। সব মিলিয়ে ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তবে তদন্তে নেমেই পুলিশের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় সব কিছু।
স্থানীয় এক যুবকের কথা তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারে পুলিশ। ঘটনার নেপথ্যে তারই হাত রয়েছে এমন অভিযোগও পুলিশের কাছে আসে। সেই ভিত্তিতে খোঁজ শুরু হয় ছোটু নামে ওই স্থানীয় যুবকের। ধরা পড়তেই নিজে মুখে সবটা স্বীকার করে ওই যুবক। সে জানায়, দীর্ঘদিন পুজো করেও তার বিয়ে হয়নি। তাই রাগের মাথায় শিবলিঙ্গ চুরি করেছে সে। তার কথা মতো, মন্দিরের অনতিদূরে এক চাষের জমি থেকে লিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়। সবার নজরের আড়ালে রাখতে লিঙ্গটিকে বাঁশ ও শুকনো পাতা দিয়ে ঢেকে রেখেছিল অভিযুক্ত ওই যুবক। ঘটনার কথা জানার পর বেজায় চটে যান স্থানীয়রাও। সকলেই একযোগে ওই যুবকের শাস্তির দাবি তোলেন। তবে তার আগেই ছোটুকে গ্রেপ্তার করে নেয় পুলিশ। চুরি অভিযোগে তাকে ইতিমধ্যেই গরাদের ওপারে চালান করা হয়েছে। তবে স্রেফ বিয়ের ইচ্ছা পূরণ হয়নি বলে, কেউ যে এইভাবে মন্দিরের শিবলিঙ্গ চুরি করতে পারে তা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন সকলে।