২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০১:০৯:২৭ অপরাহ্ন


দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ার হুমকি, প্রেমিক গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৮-২০২৩
দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ার হুমকি, প্রেমিক গ্রেফতার রাজধানীর দক্ষিণখানে ধর্ষণ মামলার আসমি রনি গ্রেফতার। ছবি: সময় সংবাদ


চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তরুণীকে অপহরণের পর গণধর্ষণ ও এর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে দেয়ার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিক মো. নুর আলম ওরফে রনিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরণী এলাকায় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার মো. নুর আলম রনি (২৮) ফেনীর পরশুরাম থানার দক্ষিণ গুথুমা গ্রামের মো. শাহাব উদ্দিন মিয়ার ছেলে।

বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে (র‌্যাব)-৭ এর ফেনী কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভুক্তভোগী ওই তরুণী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাসিন্দা। মোবাইল ফোনে ফেনীর ছাগলনাইয়ার সাগরের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। এরপর মোবাইল ফোনে কথাবার্তার এক পর্যায়ে সাগর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই সাগর ওই তরুণীকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তার বাড়ির সামনে দেখা করতে বলেন। ভিকটিম বাড়ি থেকে বের হলে সাগর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধুদের সহযোগিতায় ওই তরুণীকে জোর করে একটি অটোরিকশায় তুলে ফেনীর পরশুরাম বাজার এলাকার অজ্ঞাত ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যান।

পরবর্তীতে সাগর ও তার বন্ধুরা মিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেট ও মদ খেতে বলেন। সাগর হত্যার হুমকি দিয়ে ইয়াবা ও মদ খাওয়ানোর পর ভিকটিমকে অচেতন করেন। এরপর সাগর ও তার চার বন্ধু মিলে সারারাত পালাক্রমে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

পরদিন ১৯ জুলাই সকালে ভিকটিমের জ্ঞান ফিরলে রনি তাকে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও দেখান। এছাড়াও ভিকটিমকে হুমকি দেন, চিৎকার করলে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দেবেন।

রনি ও তার বন্ধুদের হুমকির ফলে ভিকটিম ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান। বাড়ি ফেরার পর ভিকটিম ৬/৭ দিন অসুস্থ ছিলেন। পরে ভিকটিম সুস্থ হলে পরিবারের সবার সঙ্গে পরামর্শ করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।

পরবর্তীতে গত ৩০ জুলাই ভিকটিম ফেনী জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আসামি নুর আলম রনি (২৮), সাগর (২৩), রিপন (২৫), আরিফ (২৪) ও সাকিব মুন্সীর (২৫) বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞআদালত উল্লেখিত অপরাধ আমলে নিয়ে অফিসার ইনচার্জ, পরশুরাম থানাকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী গত ১০ আগস্ট পরশুরাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি মামলা রেকর্ড হয়।

ফেনী কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম জানান, গণধর্ষণের এ ঘটনায় মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে এজাহারভুক্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।

পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র‌্যাব-১ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরণী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আসামি মো. নুর আলম রনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মনাম ধারণ করে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিলেন বলে স্বীকার করেন আসামি রনি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরশুরাম থানায় আসামিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।