প্রাকৃতিকভাবে লম্বা এবং ঘন চোখের পাপড়ি সকলের কাছেই দারুণ আকর্ষণীয় একটা ব্যপার। আর চোখের বড় বড় পাপড়ি কে না পছন্দ করে! তবে সবার চোখের পাপড়ি ঘন ও লম্বা হয় না। আবার সাজগোজের সময়ে নকল চোখের পাপড়ি ব্যবহার না করলে অনেকের যেন চোখে সাজের পরিপূর্ণতা আসে না। তবে নিজের চোখের পাপড়ি প্রাকৃতিকভাবে লম্বা এবং দারুণ সুন্দর করে তুলতে চাইলে আপনাকে জানতে হবে কিছু সহজ উপায়।
এর মধ্যে যেকোনো উপায় নিয়মিতভাবে মেনে চললে খুব সহজে আপনার চোখের পাপড়ি হয়ে যাবে প্রাকৃতিকভাবেই লম্বা এবং ঘন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই উপায়গুলো-
আঁচড়ানো: আঁচড়ানোর ফলে রক্তপ্রবাহ ত্বরান্বিত হয়, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। চোখের পাপড়ির জন্য বিশেষ ধরণের ব্রাশ অথবা খুব ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করা মাশকারার ব্রাশে কয়েক ফোঁটা ভিটামিন-ই দিয়ে দিনে দুইবার করে পাঁচ মিনিটের জন্য চোখের পাপড়ি ভালোভাবে ব্রাশ করতে হবে ।
তেল: ক্যাস্টর, নারকেল এবং অলিভ অয়েলে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা শরীরের গ্রন্থিকোষে পুষ্টি যুগিয়ে চোখের পাপড়ি সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাবার আগে এক ফোঁটা তেল ব্রাশ অথবা আঙ্গুলে নিয়ে চোখের পাপড়িতে ভালমতো লাগিয়ে নিন। আপনি চাইলে শুধুমাত্র একটি তেল অথবা দুই-তিন প্রকারের তেল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।
পেট্রোলিয়াম জেলী: পেট্রোলিয়াম জেলী চোখের রুক্ষ পাপড়ি কে নমনীয় হতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ব্রাশে অথবা হাতের আঙ্গুলে অল্প পরিমাণে পেট্রোলিয়াম জেলী নিয়ে চোখের পাপড়িতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ভালোভাবে চোখ মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
পুষ্টিকর খাবার: শরীরে পুষ্টি এবং ভিটামিনের অভাব হলে চুল এবং চোখের পাপড়ি ঝরে যাবার সম্ভবনা থাকে। তাই প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রোটিন , ভিটামিন এবং ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- বাদাম, মাংস, মাছ, ডিম, ফল এবং সবজি খেতে হবে।
গ্রিন টি: গ্রিন টিতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন। যা চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে এবং বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই খুব কড়া করে এক কাপ গ্রিন টি বানাতে হবে এবং একদম ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। চা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তুলার সাহায্যে চা চোখের পাপড়িতে ম্যাসেজ করতে হবে। দিনে দুইবার এমন করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ম্যাসাজ করা: ম্যাসাজ করলে চোখের পাপড়ির বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। মুখ এবং হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে হাতে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে নিতে হবে। এরপর চোখের পাপড়ি, চোখের পাতা এবং চোখের চারপাশে খুব যত্নসহকারে এবং ভালোভাবে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে কয়েকবার এটি করতে হবে।
ডিমের মাস্ক: ডিমে রয়েছে বায়োটিন এবং বি-গ্রুপ ভিটামিন সমূহ, যা চুল এবং চোখের পাপড়ির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ঝরে যেতে বাঁধা দেয়। একটি সম্পূর্ণ ডিম এবং এক টেবিল চামচ গ্লিসারিন অথবা পেট্রোলিয়াম জেলী একসঙ্গে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ চোখের পাপড়িতে লাগাতে হবে। সপ্তাহে অন্তত তিনবার এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করতে হবে কয়েক মাসের জন্য।
পরিষ্কার থাকা: চোখের পাপড়িতে মাশকারা নিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং চুলে হেয়ার স্প্রে নিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া একই রকম ক্ষতিকর। তাই সকল মেকআপ পরিষ্কার করে নেয়া আবশ্যক। তাই খুব সাবধানে এবং ভালোভাবে সকল মেকআপ পরিষ্কার করে ফেলুন। এক্ষেত্রে মেকআপ রিমুভার অথবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন ।
মেকআপ করা থেকে কিছুদিনের জন্য বিরতি নিন: মাশকারার কিছু উপাদান চোখের পাপড়িতে নিস্প্রভ এবং নিস্প্রাণ করে দেয়।এরজন্য কিছুদিন পরপর মেকআপ করার ক্ষেত্রে বিরতি নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ১-২ দিন কোনো প্রসাধনী সামগ্রী চোখে ব্যবহার করা যাবে না। কোনো মাশকারার বয়স ৩ থেকে ৬ মাসের বেশি হয়ে গেলে, সেটি অবশ্যই ফেলে দিতে হবে। শরীরের যেকোনো অংশের মতো, চোখের পাপড়ির প্রতি বাড়তি যত্ন নিলে সেও দারুন হয়ে উঠবে। তার জন্য পরিচর্যার সঠিক পদ্ধতি এবং উপাদানের নাম জানা থাকা প্রয়োজন।