মহিলাদের জীবনে দুটো সময় সবচেয়ে বেশি সচেতন ও সুরক্ষিত থাকতে হয়। এক, গর্ভাবস্থায় আর দুই প্রসবের পরে। গর্ভাবস্থায় যেমন নিজের ও ভ্রুণের খেয়াল রাখতে আপনাকে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, একইভাবে প্রসবের পরও ডায়েটের উপর জোর দিতে হবে। প্রথমত, প্রসবের পরও নতুন মায়ের শরীরে পুষ্টির প্রয়োজন হয়।
কারণ এসময় নতুন মায়ের দেহে মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়, শক্তি কমে যায় এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। আর দ্বিতীয়ত, সদ্যজাতকে স্তন্যপান করান।
নতুন মায়ের দেহে স্তনদুগ্ধের পরিমাণ কম হলে বুঝবেন, আপনার দেহে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে। যেহেতু স্তনদুগ্ধ সদ্যজাতের দেহে অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে, শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে তোলে, তাই এই বিষয়ের সঙ্গে আপোস করা চলবে না। সদ্য মায়ের হলদেটে দুধ শিশুকে সুস্থ থাকতে এবং বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পুষ্টির দিক দিয়ে মায়ের দুধের কোনও বিকল্প নেই। নবজাতককে মায়ের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রতি বছর ১ থেকে ৭ আগস্ট বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় ওয়ার্ল্ড ব্রেস্ট ফিডিং উইক। স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে আপনি বেশ কিছু খাবারের সাহায্য নিতে পারেন।
মৌরি: মৌরি সদ্যজাত মায়েদের মধ্যে স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মৌরির মধ্যে ইস্ট্রোজেন রয়েছে। এটি স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মেথি দানা: মেথির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোইস্ট্রোজেন রয়েছে। এটি নতুন মায়ের দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি স্তনে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এক্ষেত্রে রোজ মেথি ভেজানো জল কার্যকর হতে পারে।
শতবরী: আয়ুর্বেদে ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে এই ভেষজ উপাদানের। শতবরী নতুন মায়ের দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে এবং স্তনদুগ্ধের গুণগত মান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
জোয়ান: গ্যাস-অম্বলের ঝুঁকি এড়াতে জোয়ান খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। জোয়ানের মধ্যে galactagogues নামের একটি যৌগ রয়েছে। এটি নতুন মায়েদের দেহে দুধের উত্পাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
বাদাম: রোজের ডায়েটে কাজু, আখরোট, আমন্ডের মতো বাদাম খাওয়া ভাল। এগুলো সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এসব বাদাম স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
গোন্দ: এটিতে ফাইটোস্ট্রোজেন রয়েছে। এটি এক ধরনের উদ্ভিজ্জ যৌগ, যা নতুন মায়ের দেহে ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এই ইস্ট্রোজেন স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।