০৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:২১:০৬ পূর্বাহ্ন


আদালতে যুবককে ধরে টানাটানি দুই ‘স্ত্রী’র
সুমাইয়া তাবাস্সুম:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৮-২০২৩
আদালতে যুবককে ধরে টানাটানি দুই ‘স্ত্রী’র আদালতে যুবককে ধরে টানাটানি দুই ‘স্ত্রী’র


মঙ্গলবার সকালে ঘাটাল আদালতে এক যুবককে ধরে টানাটানি করছেন দুই মহিলা। দু’জনেরই দাবি, তাঁরা ওই যুবকের স্ত্রী। একজন কোনওরকমে আঁচলে মুখ গুঁজে দাঁড়িয়ে, আর দ্বিতীয়জন এমনই টানাটানি শুরু করেছেন, যেন কোনওভাবেই হাল ছাড়বেন না। তিনজনের এই দৃশ্য দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে যায় আদালত চত্বরে। 

যুবক জানালেন, দু’জনেই তাঁর স্ত্রী। একজন প্ৰথম পক্ষের, তাঁর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। অপরজন দ্বিতীয় পক্ষের। বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও তাঁকে ছেড়ে এখন আলাদাই থাকেন তিনি। আর এই আলাদা থাকার পর থেকেই প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মোড় আসে। গোটা বিষয়টি জানার পর তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। যুবকের নাম প্রশান্ত কয়ারি।

পুলিশকে প্রশান্ত জানান, ২০১৯ সালে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় দাসপুরের বাসিন্দা মৌসুমী চক্রবর্তীর। তবে মাসখানেকের মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন প্রশান্ত। গৃহবধূর নাম বনানী হোড়। তিনি ঘাটালের হরেকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা। বনানীর সঙ্গে ভালই সংসার করছিলেন যুবক। কিন্তু গন্ডগোল বাঁধে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর। বনানীর অভিযোগ, প্রশান্ত তাঁকে মারধর করছে।

সেই অবস্থাতেই স্বামীর ঘর ছাড়েন ওই মহিলা। গর্ভবতী অবস্থাতেই ফিরে যান বাপের বাড়ি। এর কয়েকমাসের মধ্যেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মহিলা। সেই বাচ্চার এখন সাত মাস বয়স। এদিকে বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি প্রশান্ত। খোঁজ নেননি বাচ্চারও। এরমধ্যেই হঠাৎ প্রথম পক্ষের স্ত্রী মৌসুমীর সঙ্গে আবারও প্রশান্তের সম্পর্ক জোড়া লাগতে শুরু করে।

মৌসুমী ততদিনে প্রসেনজিৎ রায় নামের এক যুবককে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছেন। কিন্তু প্রথম পক্ষের বরের ভালবাসার টানে নতুন শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন তিনি। বিয়ের ঠিক ১৬দিন পর সেখান থেকে বাপের বাড়ি ফিরেই হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যান। পরে খবর পাওয়া যায়, তিনি ফিরে গিয়েছেন প্রথম পক্ষের বরের কাছেই। শেষে প্রশান্ত এবং মৌসুমী দু’জনেই প্রসেনজিতের কাছে ডিভোর্সের আবেদন করেন। সদ্য বিয়ে হলেও স্ত্রীর আবেদন ফেরাননি প্রসেনজিৎ। তাতে রাজি হন তিনি।

এরপরই মঙ্গলবার সকালে ঘাটাল আদালতে ডিভোর্সের আবেদন নিয়ে হাজির হন তিনজন।

এদিকে কোনওভাবে বিষয়টির খবর পেয়ে যান প্রশান্তর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী বনানীও। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছুটে আসেন আদালত চত্বরে। তারপরেই শুরু হয়  প্রশান্তকে টানাটানি। শেষে বনানী পুলিশের কাছে অভিযোগ করতেই স্বামীকে ধরে নিয়ে চলে যায় পুলিশ।