পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ফল আম। সৌন্দর্য, স্বাদ আর পুষ্টিগুণে সেরা এই ফলের রয়েছে লম্বা ইতিহাস। পৃথিবীতে রয়েছে আমের প্রায় ৩৫টি প্রজাতি। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম। বিশ্বের সবচেয়ে দামি এ আমের গড়ন সাধারণ আমের চাইতে বড় ও লম্বা, স্বাদে মিষ্টি এবং আমের বাইরের আবরণ দেখতে গাঢ় লাল অথবা লাল-বেগুনির মিশ্রণে একটি রঙের।
এর জন্মস্থান জাপান। আন্তর্জাতিক বাজারে মিয়াজাকি আমের একটির দাম ৭০ ডলার। তার মানে দাঁড়ায় একটি আম খেতে বাংলাদেশি টাকায় গুনতে হবে প্রায় ১৩ হাজার টাকা। এ হিসাবে জাপানের এক কেজি মিয়াজাকি আম কিনতে খরচ হয়ে যাবে প্রায় ৩ লাখের মতো টাকা।
এর ফলনে রয়েছে অনেক সতর্কতা। এ আমের স্বাদ এর রঙের ওপর নির্ভর করে। জাপানিরা এই আমকে খুবই সম্মানের সাথে দেখে এবং সাবধানতার সাথে ধরে থাকে। প্রতিটি আমের ওজন হয় প্রায় ৩৫০ গ্রাম ।
এই প্রজাতির আম এখন ভারত এবং বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত এই আম প্রতিকেজি খুচরা বাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাংলায় এই আম পরিচিতি পেয়েছে ‘সূর্যডিম’ নামে। মূলত চাহিদা মোতাবেক যোগান কম থাকা, মিষ্টি স্বাদ, ভিন্ন রঙ এবং চাষপদ্ধতির কারণে আমটির দাম এত বেশি। এছাড়াও কিছু বিশেষত্ব থাকার কারণে এ আম এত দামি।
ডিটক্সপ্রির প্রতিষ্ঠাতা এবং হলিস্টিক নিউট্রিশনিস্ট প্রিয়ংশি ভাটনাগরের মতে, এ আমটির অনন্য সুগন্ধ এবং স্বাদ রয়েছে। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এ আমটিতে।
এ আমের আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এ আমে রয়েছে একসঙ্গে একাধিক পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ই, এ এবং কে ছাড়াও কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।
হজমশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি এটি বদহজম বা পেটের সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখা, ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে এ আম বিশেষভাবে কার্যকরী।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, মিয়াজাকি আম কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষভাবে সহায়ক। এ ছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম মিয়াজাকিতে রয়েছে ক্যানসারর প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য। নিয়মিত এ ফলটি খাওয়ার অভ্যাসে বিভিন্ন রকমের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিগুণ ছাড়া, স্বাদেও এই আমটি অনন্য। তথ্যসূত্র: বিবিসি