বর্তমানে স্মার্টফোনের ব্যবহার যত বেড়েছে, একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ইয়ারবাডের ব্যবহার। ইয়ারবাড, সেগুলি তারযুক্ত হোক বা ওয়্যারলেস হোক, তা সঙ্গীত, পডকাস্ট এবং আরও অনেক কিছু উপভোগ করার জন্য আমাদের প্রায় সকলের জীবনেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
অনেক মানুষ এখন দিনের বেশিরভাগ সময় কানে ইয়ারবাড দিয়ে কাটায়। কিন্তু ইয়ারবাড এবং হেডফোনের দীর্ঘায়িত ব্যবহার শ্রবণ ক্ষমতার ক্ষতি করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনও হতে পারে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের তেমনই একটি খবর নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির চিকিৎসকদের একটি দল উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরের ১৮ বছর বয়সী এক ছেলের শ্রবণশক্তি সফলভাবে পুনরুদ্ধার করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে যে, অত্যধিক মাত্রায় এবং দীর্ঘক্ষণ ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে সংক্রমণের কারণে ছেলেটির শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে।
অস্ত্রোপচারের ফলে অবশ্য সে স্বাভাবিকভাবে শ্রবণশক্তি ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার যে অত্যধিক ইয়ারবাডের ব্যবহার নিজেদের অজান্তেই আমাদের কানের বিশাল বড় ক্ষতি করে চলেছে।
সেই প্রতিবেদনে ইয়ারফোনের বেশি ব্যবহার থেকে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়ার ঘটনা বিশেষ করে আলোকপাত করা হয়েছে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি করে দেখা যাচ্ছে।
যখন ইউজাররা দীর্ঘ সময় ধরে ইয়ারবাড পরেন, তখন কানের পর্দার আর্দ্রতা বেড়ে যায়। যা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিকাশের জন্য একটি প্রজননস্থল তৈরি করে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় ডাক্তারেরা জানিয়েছেন যে “আমাদের শরীরের মতো, কানের পর্দাতেও বায়ু চলাচল প্রয়োজন। ইয়ারবাড দিয়ে অনেক সময় ধরে কান বন্ধ করে রাখার ফলে ঘাম জমে এবং পরবর্তীতে সংক্রমণ হয়।”
ইয়ারবাড থেকে তৈরি হওয়া কানের সংক্রমণ কম করার জন্য কয়েকটি উপায় অবলম্বন করা প্রয়োজন।
নিজেদের ইয়ারবাডগুলি কখনও অন্য লোকেদের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়। বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তা শেয়ার করা উচিত নয়। কারণ এটি সংক্রমণকে ছড়িয়ে দিতে পারে এবং আরও খারাপ করতে পারে।
ইয়ারবাড বা হেডফোন ব্যবহার করার মধ্যে বিরতি নিতে হবে। কেউ যদি এগুলি কাজের জন্য ব্যবহার করেন, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে শ্রবণশক্তি হ্রাস এড়াতে হেডফোনের ভলিউমটি কম করে রাখতে হবে। এছাড়াও ইয়ারবাড বা হেডফোনের সামগ্রিক ব্যবহার সীমিত করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পাশাপাশি নিয়মিত নিজেদের কানের পর্দা পরিষ্কার করতে হবে। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বৃদ্ধি রোধ করতে নিজেদের ইয়ারবাডগুলিও পরিষ্কার করা প্রয়োজন।