ফোনের ভাল-মন্দ বুঝে ওঠার আগেই ফোনের প্রতি এই আসক্তি শিশুদের শরীরে এবং মনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আবার খানিকটা প্রয়োজনে পড়েও বাচ্চাদের হাতে ফোন দিতে হয় কর্মব্যস্ত অভিভাবকদের। তাই একটি প্রশ্ন অভিভাবকদের মনে প্রায়ই ঘুরে ফিরে আসে যে, শিশুদের হাতে মোবাইল দেওয়ার সঠিক বয়স কোনটি।
মাইক্রোসফ্ট কর্তা বিল গেটসও অভিভাবকদের অনুরোধ করেছেন, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা যেন ১৪ বছরের আগে সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে না দেন। তাঁর নিজেরও ২০, ১৭, ১৪ বছরের তিন সন্তান। তাদের কেউই হাইস্কুলে ওঠার আগে মোবাইল হাতে পায়নি। গেটস জানিয়েছেন, বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন খুব সহজ কাজ নয়। অভিভাবকেরাই ঠিক করবেন, এক জন শিশুর বেড়ে ওঠা কেমন হবে। তাই শিশুর হাতে কখন মোবাইল তুলে দেবেন, কত দিন পর্যন্ত দেবেন না— সেই সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে হবে।
কোন তিনটি বিষয়ে যাচাই করে বাচ্চার হাতে মোবাইল দেবেন?
১) সন্তানকে মূল্যবোধের পাঠ দিতে হবে। অভিভাবকের আর্থিক পরিস্থিতি কেমন, সে বিষয়েও সম্যক ধারণা থাকা দরকার। শুধু ফোন ব্যবহার করলেই হবে না, তার জন্য মা-বাবাকে কত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, সেই সম্পর্কেও সন্তানকে জানিয়ে রাখা জরুরি।
২) সারা দিন ফোনে চোখ রেখে মাথাব্যথা, চোখ থেকে জল পড়া এমনকি অবসাদ পর্যন্ত গ্রাস করতে পারে বাচ্চাদের। সেই সম্পর্কেও শিশুদের জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। নিজের শরীর এবং মনের ক্ষতি না করে যদি তারা ফোন ব্যবহার করতে পারে, তা হলে ফোন দিয়ে দেখা যেতেই পারে।
৩) এখন ইন্টারনেট বা আন্তর্জাল ছাড়া সাধারণ ফোন কেউ ব্যবহার করেন বলে ভাবতেই পারেন না অনেকে। বাচ্চারাও সেই রংবেরঙের দুনিয়ায় আকৃষ্ট হয় বেশি। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের খারাপ প্রভাব রয়েছে। ফোন হাতে দেওয়ার আগে তার ভাল-মন্দ জানিয়ে তবেই ফোন দেওয়া উচিত বলে মনে করেন মনোবিদরা।
মনোবিদদের মতে, স্কুলের অনলাইন পড়াশোনার জন্য ছোট বাচ্চাদের হাতে না চাইলেও মোবাইল ফোন দিতে হচ্ছে। আবার অনেক পরিবারেই চাকরিরত মা-বাবা বাড়িতে সহায়িকার ভরসায় বাচ্চাকে রেখে কাজে বেরোন। সে ক্ষেত্রেও বাচ্চার কাছে ফোন থাকা জরুরি। তবে প্রয়োজন ছাড়া সারা দিনে ফোনের পিছনে সে কত ক্ষণ সময় ব্যয় করছে, সে দিকে নজর রাখতে হবে অভিভাবকদেরই। এ ছাড়াও তিনটি বিষয় যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে তবেই বাচ্চার হাতে মোবাইল দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।