যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মন মেজাজ খারাপ থেকে ভালো করার একটি পদ্ধতি হলো লাফিং থেরাপি। এই থেরাপিতে আপনার অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপনাকে হাসতে হয়। হাসার এই অভ্যাস আপনার জীবনের নেতিবাচক প্রভাবগুলোকে দূরে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে। এত দিন আমরা এই লাফিং থেরাপির কথাই শুধু জানতাম। তবে এবার গবেষণায় উঠে এসেছে ক্রায়িং থেরাপির কথাও।
ক্রায়িং থেরাপি হলো লাফিং থেরাপির ঠিক উল্টো। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশে আপনাকে পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদতে হবে। তবে তা শুধুই একান্তে। এই থেরাপির অভ্যাস আপনার মনকে অনেকটা হালকা করবে। সেই সঙ্গে পাবেন নতুন করে কাজ শুরু করার প্রেরণাও।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চোখের জলই সুস্বাস্থ্য গড়ার চাবিকাঠি। চোখের জল বা কান্না মানেই শুধু দুঃখ বা আনন্দের বহিঃপ্রকাশ নয়, এটি মস্তিষ্ক ও মনের আরামেরও একটি কারণ। তাই যত কাঁদবেন ততই স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
বড়দের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির ক্ষেত্রেও কান্নার উপকারিতা রয়েছে। কাঁদলে শরীর থেকে নানা ধরনের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। দূষণের কারণে চোখে যে ধুলোবালি, ধোঁয়া প্রবেশ করে, কাঁদলে চোখের জলের সঙ্গে তা বেরিয়ে আসে। চোখের জলের মাধ্যমে শরীর থেকে বেশ কিছু টক্সিন নির্গত হয়ে যায়।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কান্না করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। শিশুকালে বাচ্চা যতো কাঁদবে ততোই হৃৎপিণ্ড সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
কাঁদলে চোখের শুষ্কতাও দূর হয়। বিশেষ করে যারা ড্রাই আইয়ের সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য কান্না অনেক উপকারী। এই জল চোখের মিউকাস মেমব্রেনের শুকিয়ে যাওয়া রোধ করে। ফলে দৃষ্টিশক্তিও ভালো হয়।
কাঁদলে ওজনও কমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কান্নার সময় শরীর থেকে ক্যালোরি নির্গত হয়। আর এই ক্যালোরি নির্গত হলেই অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। আমরা যখন কাঁদি তখন শরীর থেকে কর্টিসোল নামে এক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনের মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে দ্রুত মেদ ঝরতে পারে।
কাঁদার সময় মস্তিষ্কে এনডরফিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন অবসাদ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কাঁদলে মন অনেকটা হালকা হয়ে যায় ও মেজাজেরও পরিবর্তন ঘটে। অনেক ক্ষেত্রেই কান্নার পর মানুষ নতুন করে কাজ করার উদ্যম খুঁজে পান। তাই শরীর ও মন সুস্থ রাখতে ক্রায়িং থেরাপির অভ্যাস করতে পারেন।
রাজশাহীর সময় / এফ কে