পৃথিবীর জনপ্রিয় পানীয়ের তালিকায় কফির স্থান একদম উপরের দিকে। সদ্য প্রকাশিত এক গবেষণার প্রতিবেদন জানাচ্ছে, কফি পানে লিভারের বিভিন্ন জটিলতার আশঙ্কা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
লিকুইড এনার্জি বা ব্রেইন জুস যে নামেই কফিকে ডাকা হোক না কেন, বহুকাল ধরে এটি মগভর্তি হয়ে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে শরীর ও মনকে চাঙ্গা করছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই চা এবং কফি বেশ প্রতিযোগিতা করেই মানুষের প্রিয় পানীয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
অনেকেই জানতে চান, তারা যে চা কিংবা কফি খাচ্ছেন; তা শরীরের জন্য আসলেই আশীর্বাদস্বরূপ না-কি হুমকিস্বরূপ! এতোকাল ধরে আমরা কফির জনপ্রিয়তায় জোয়ার-ভাটা দেখেছি! তবে সম্প্রতি এক গবেষণা অনুসারে, কফি লিভারের জন্য হতে পারে আশীর্বাদস্বরূপ।
এই সুসংবাদটি দিয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত রয়েল সোসাইটি অব মেডিসিন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় করা এক গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ব্রিটিশ লিভার ট্রাস্টের অভিজ্ঞ পরামর্শক গ্রায়েম আলেকজান্ডার।
তাছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশের লিভার এসোসিয়েশনের অভিজ্ঞ প্রতিনিধিরাও এই গবেষণায় অবদান রেখেছেন। তারা কফি পানের সঙ্গে লিভারের সম্পর্ক নিয়ে সাম্প্রতিককালের গবেষণার রিপোর্ট এবং এ বিষয়ক অন্যান্য ইস্যু এবং চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা করেছেন।
লিভারের রোগ যেভাবে বাড়ছে
যদিও লিভার মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত। তা সত্ত্বেও হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় আমরা যতটা উদ্বিগ্ন হই; লিভারের সমস্যায় ততটা উদ্বিগ্ন হন না অনেকেই। আগের সব গবেষণাকে পেছনে ফেলে স্বস্তিদায়ক খবর হচ্ছে, কফিই আপনাকে বাঁচিয়ে দিতে পারে লিভারের নানা জটিলতা থেকে।
অধ্যাপক আলেকজান্ডার বলেন, ‘ইউরোপ আমেরিকাসহ পৃথিবীর অন্যান্য অংশে দিন দিন লিভারের জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখেছি, কফি কীভাবে এই রোগের প্রতিরোধে আশ্চর্যজনকভাবে কার্যকরী।
লিভারের সমস্যা প্রতিরোধে কফি
গবেষণাপত্রে বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যারা কফি পান করেন তাদের তুলনায় যারা কফি পান করেন না তাদের লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কম থাকে। অতীতে ধারণা করা হতো, লিভারে আগে থেকেই এমন কোনো জটিলতা থাকে; যার কারণে পরবর্তীতে সেটা লিভার ক্যান্সারের দিকে মোড় নেয়।
তবে কফি পানকারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের লিভারে হয়তো এমন কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যায়, যার কারণেই ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। তাছাড়া কফি পানে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও ২৫-৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
ব্রিটিশ লিভার ট্রাস্টের প্রধান নিবার্হী জুডি রাইস বলেন, ‘লিভারের রোগ নীরব ঘাতকের মতো আমাদের দেহে বাস করে। খুব দেরি হওয়ার আগ পর্যন্ত এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। দৈনন্দিন জীবনে খুব সহজেই হাতের কাছে পাওয়া এই কফি লিভারের জটিলতাকে কমিয়ে আনতে কিংবা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে