আপনার বয়স যা-ই হোক, আপনার শরীরে থাকা হার্টের বয়স কিন্তু বাড়ছে। হতেই পারে, শরীরের যা বয়স, তার ছেয়ে ঢের বেশি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছে হার্ট। গবেষণায় এমনটাই দেখেছেন ব্রিটেনের নরউইচের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাঙ্গলিয়ার বিজ্ঞানীরা।
বুড়ো হচ্ছে হৃদয়। কমছে তার কর্মক্ষমতা। কম বয়সেই বৃদ্ধ হার্ট নিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে অনেককেই। আসলে বিষয়টি হল, স্থূলত্ব যত বাড়বে, রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা ছাড়াবে, রক্তে শর্করা যত বাড়বে, ততই প্রবীণ থেকে প্রবীণতর হয়ে পড়বে হার্ট। কমে যাবে তার রক্ত সঞ্চালনের ক্ষমতা। একদিন হঠাৎ করেই ধুকপুকানি বন্ধ হবে আগাম কোনও লক্ষণ ছাড়াই।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কম বয়সে এত বেশি হার্ট অ্যাটাকের কারণই হল হৃদ্যন্ত্রের বয়স বৃদ্ধি। ৫৫৭ জনের উপর পরীক্ষা করে গবেষকেরা এই তথ্য দিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের দু’টি দলে ভাগ করে পরীক্ষাটি করা হয়। একটি দলে ছিলেন ১৯১ জন, যাঁদের কোনও অসুখবিসুখ নেই। অন্য দলে ৩৬৬ জন ছিলেন, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস বা স্থূলত্ব রয়েছে। গবেষকেরা একটি বিশেষ ধরনের এমআরআই স্ক্যানার ব্যবহার করে হার্টের মতিগতি লক্ষ করেছেন। দেখা গিয়েছে, যাঁদের কোনও রোগ ছিল না, তাঁদের হার্ট সতেজ ও কর্মক্ষম। তবে যাঁদের নানা অসুখবিসুখ রয়েছে তাঁদের হার্টের কার্যক্ষমতা অনেক কম। শুধু তা-ই নয়, হার্টের ‘ফাংশনাল এজ’ অনেক বেশি।
হার্টের বয়স কতটা বাড়ছে, তা হৃৎস্পন্দনের হার দেখেও বোঝা সম্ভব। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিসের রোগীদের হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত। অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন সাধারণত হার্ট ব্লক থেকে হয়ে থাকে। একে বলা হয় ব্র্যাডিঅ্যারিদ্মিয়া। এ ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন ৬০-এর নীচে চলে যায়। হার্টের ভিতরে ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস গেলে তবে হার্ট সঙ্কুচিত হয়। এই ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস যেখানে তৈরি হয়, সেই জায়গার যদি গন্ডগোল থাকে, তা হলে হার্টরেট কমে যেতে পারে। স্থূলত্ব, কোলেস্টেরলের কারণে এই গন্ডগোলই দেখা দেয়। তখন হার্ট কমজোরি হয়ে পড়তে থাকে। পরিণতিতে হার্ট অ্যাটাক হয় আচমকাই।