১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৭:২৪:৪৮ পূর্বাহ্ন


জরায়ুমুখের ক্যানসারের চিকিৎসা আরও সহজ হবে
তানজিম তুরজিম :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৪-২০২৫
জরায়ুমুখের ক্যানসারের চিকিৎসা আরও সহজ হবে জরায়ুমুখের ক্যানসারের চিকিৎসা আরও সহজ হবে


জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার জন্য ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সি কিশোরীদের টিকা দেওয়ার চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছিলেন, জরায়ুমুখের টিকা নিয়ে খুব তাড়াতাড়িই কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে দেশ জুড়ে। তবে তার মধ্যেই ভাইরাসের ডিএনএ চিহ্নিত করতে দু’টি নতুন পরীক্ষাপদ্ধতি চলে এল দেশে। কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল (বিআইআরএসি) ঘোষণা করেছে, দু’টি এইচপিভি টেস্ট-কিট বাজারজাত করা হয়েছে। এই টেস্ট-কিটে কম সময়ে ও কম খরচে ভাইরাস চিহ্নিত করা যাবে।

বিশ্ব জুড়ে মহিলাদের মধ্যে যত ধরনের ক্যানসার দেখা যায়, তার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সারভিক্যাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখের ক্যানসার রয়েছে চতুর্থ স্থানে। আর এই ক্যানসার রোগীদের এক- চতুর্থাংশই ভারতীয়। বছরে গড়ে এক লক্ষেরও বেশি মহিলা জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এই ক্যানসারের জন্য দায়ী ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস’ (এইচপিভি)। এর ২০০ রকম প্রজাতি রয়েছে, যার মধ্যে ১২টি ক্যানসারের জন্য দায়ী। বিশেষ করে এইচপিভি ১৬ ও এইচপিভি ১৮ জরায়ুমুখের ক্যানসারের কারণ। এইচপিভি ৬ ও ১১-র কারণে যৌনাঙ্গের আঁচিল হয়।

এইচপিভি ভাইরাস ঠেকাতে প্রতিষেধক দেওয়াই সবচেয়ে আগে জরুরি। তবে যদি দেখতে হয় যে জরায়ুতে ভাইরাস বাসা বেঁধেছে কি না, তা হলে অনেক জটিল পরীক্ষাপদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তার খরচও অনেক। সে কারণেই ভাইরাস চিহ্নিত করতে আরও সহজ পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে। এইচপিভি টেস্ট-কিট আসলে ‘রিয়্যাল-টাইম আরটি-পিসিআর’ পদ্ধতি। এই টেস্ট-কিটে এক ধরনের চিপ বসানো রয়েছে, যাতে রোগীর শরীর থেকে নেওয়া নমুনা ফেললে তার জিনগত বিন্যাস খুব দ্রুত হবে। যদি ভাইরাস থাকে, তা হলে সেটি কোন প্রজাতির এবং ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠবে কি না, তা জিনের বিন্যাস দেখেই ধরতে পারবেন চিকিৎসকেরা। রোগ দেখা দেওয়ার আগেই সতর্ক হওয়া যাবে। আবার যদি ক্যানসার কোষের বিভাজন শুরু হয়ে যায়, তা হলে দ্রুত তা শনাক্ত করে চিকিৎসাও শুরু করা যাবে।

এমস, নয়ডার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্যানসার প্রিভেনশন অ্যান্ট রিসার্চ (এনআইসিপিআর) এবং মুম্বইয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন প্রোডাকটিভ অ্যান্ড চাইল্ড হেল্‌থ (এনআইআরআরসিএইচ)-এর উদ্যোগে টেস্ট-কিট তৈরি হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি দেশের সব রাজ্যে তা সরবরাহ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লি এমসের স্ত্রীরোগ চিকিৎসক তথা এই কর্মসূচির চিফ কোঅর্ডিনেটর নীরজা বার্তা জানিয়েছেন, টেস্ট-কিটের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই তা নির্ভুল ফলাফল দিচ্ছে। এইচপিভি ডিএনও ও প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষার থেকে অনেক কম খরচে এই টেস্ট করা যাবে। ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সি মহিলারা বছরে এক বার বা দু’বার এই পরীক্ষা করিয়ে নিলে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন।