২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:১৫:১৭ অপরাহ্ন


পানি পানে যে ৬টি আমল করতেন বিশ্বনবি
রাজশাহীর সময় ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০১-২০২২
পানি পানে যে ৬টি আমল করতেন বিশ্বনবি ফাইল ফটো


ইসলামীক ডেস্ক: ইসলামের বিধান শুধু নামাজ রোজা হজ জাকাত তথা ইবাদত-বন্দেগির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং দুনিয়ার প্রতিটি কাজের সঙ্গেই ইবাদত-বন্দেগি ও ইসলামের রীতি-নীতি জড়িত। খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছুই মানুষের জন্য ইবাদত হবে যখনএসব কাজ ইসলামি পদ্ধতিতে করা হবে।

যেমন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবার ও পানীয় গ্রহণ করা অত্যন্ত আবশ্যক। আবার জীবনধারণে পানি পান করাও আবশ্যক। পানির অপর নাম জীবন। জীবন বাঁচাতে পানি পানের বিকল্প নেই। সব সৃষ্টিরই বেঁচে থাকার তাগিদে পানি পান করতে হয়।

আর মানুষের পানি পানে রয়েছে কিছু ইসলামি নিয়ম ও পদ্ধতি। কাজটি ছোট হলেও প্রতিদিন অনেকবার মানুষকে পানি পান করতে হয়। পানি পানের সময় স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুনির্দিষ্ট কিছু আমল করতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাস্তব জীবনের এ আমলগুলো উঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায়। আমলগুলো হলো-

>> পানি পানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা পানি পান করতে যাবে তখন প্রথমেই ‘বিসমিল্লাহ’ পড়বে।’ (তিরমিজি)

শুধু পানি পানের সময়ই নয়, বরং যে কোনো কিছু খাওয়ার সময় এবং ভালো যে কোনো কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হবে।

>> সবসময় ডান হাতে পানি পান করা-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কখনো খাবার এবং পানীয় বাম হাতে গ্রহণ করবে না। কেননা শয়তান বাম হাতে খাবার গ্রহণ করে।’ (মুসলিম)

সব ভালো কাজে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মতো ভালো কাজে ডান হাত ব্যবহার করাও উত্তম। এমনকি পোশাক পরার সময়ও আগে ডান দিক থেকে শুরু করা। আর ডান দিক থেকে শুরু করতে হলে ডান হাতই ব্যবহার করতে হয়।

>> সবসময় বসে পানি পান করা-

হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ মুসলিমে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (আগে) বসুন এবং পানি করুন।’

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মতেও এটি সর্বজন বিদিত যে, দাঁড়িয়ে পানি পান করার চেয়ে বসে পানি পান করা বেশি ভালো। আ বসে পানি পান করা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত।

>> ৩ নিঃশ্বাসে পানি পান করা-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কখনো এক নিঃশ্বাসে পানি পান করোনা। বরং তোমরা দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করো।

অনেককেই দেখা যায়, পানি পান করার সময় ইচ্ছায়, অনিচ্ছায় এক নিঃশ্বাসে মগ কিংবা গ্লাসে পুরো পানি পান করে থাকে। আবার অনেকে পানিও পান করতে থাকে আর নিঃশ্বাস ফেলতে থাকে। এর কোনোটিই ঠিক নয় বরং সুন্নাত বিরোধী কাজ। তাই পানি পানের সময় অল্প অল্প করে ২/৩ বারে পানি পান করা। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানেও এটি উপকারী।

>> গ্লাসের পানিতে নিঃশ্বাস না ছাড়া

তিবরানিতে এসেছে, ‘পানি পান কিংবা খাবার গ্রহণের সময় মুখ থেকে পানি কিংবা খাবারে নিঃশ্বাস না ছাড়া।’

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিষয়টি সুস্পষ্ট করা হয়েছে যে, অনেক সময় মুখে অনেক বা মুখের সামনে অনেক ব্যাকটেরিয়া বা জীবানু থাকে। পানি বা খাবারে ফুঁ দেয়া বা নিঃশ্বাস ফেলানোর ফলে এ জীবানু ব্যাকটেরিয়া পানি ও খাবারের সঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। আর তাতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

>> সবসময় পানি পানের পর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়া

পানি পানের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় স্বরূপ সবসময় ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা। সুন্দর ও নিরাপদভাবে খাবার ও পানীয় গ্রহণের পর আল্লাহর প্রশংসামূলক বাক্য ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলায় তারই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পানি পানের সময় সহজ এ আমলগুলো নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন। সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভ করার তাওফিক দান করুন। করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় / এফ কে