রাজশাহীর সেই ভুয়া সাংবাদিক এবার বাগমারায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের খেয়ে থানায় মুচলেকা দিয়ে শেষ রক্ষা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মে ) রাত ১০ টার সময় তাহেরপুরে এ ঘটনা ঘটে। তাহেরপুরের যুবলীগ নেতার কাছে চাঁদা দাবি করেন রাজশাহীর দুই ভুয়া পরিচয়দানকারী সাংবাদিক।
ওই ভুয়া পরিচয় দানকারী সাংবাদিকরা হলেন, রাজশাহীর কাটাখালী থানা এলাকার পাক ইসলামপুরের জনাব আলীর ছেলে নুরুজ্জামাল ও নগরীর দরগাপাড়া এলাকার আজিমুদ্দিনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম রনি।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১৭ মে রাত ৮ টার দিকে তাহেরপুর পৌর যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে ফোন করে চাঁদা দাবি করেন তারা। এরপর তারা যুবলীগ নেতার অফিসে গিয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে মর্মে ভয়-ভিতি প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত জনতা বুঝতে পারে তারা সাংবাদিক নহে চাঁদাবাজ। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গণধোলাই দিয়ে বাগমারা থানা পুলিশে সোপর্দ করতে গেলে কৌশলে নুরুজ্জামাল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান জীবনের অনুরোধে মুচলেকায় ছাড়া পায় তারা।
পরে ভুয়া সাংবাদিকরা এসে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা এক সাংবাদিক সংগঠনের ছত্রছায়ায় ফেইসবুক পেইজে বাগমারার এমপিসহ যুবলীগ নেতা ও সাংবাদিককে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডার ছড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যুবলীগ নেতা সোহেল বলেন, আমরা সাংবাদিক বান্ধব। আমরা সম্প্রতি দেখছি কিছু কতিপয় দুষ্ট লোক সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তারা আমার কাছে এসে পুকুর খনন করছি মর্মে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আসলে আমি এখন কোনো পুকুর খননের সঙ্গে জড়িত না। পরে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি তারা আসলে কেউ সাংবাদিক না। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের মারধর করেন। আমি তাদের থেকে ওই দুজনকে উদ্ধার করে বাগমারা থানা পুলিশে হস্তান্তর করি। আমরা এও অবগত হই এরা এর আগে নাটোরে গিয়ে চাঁদাবাজিকালে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বললে বাগমারা থানার ওসি অরবৃন্দ সরকার বলেন, ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিকালে দুজন কথিত সাংবাদিককে তাহেরপুরের জনতা আটক করেন। এরমধ্যে একজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। অন্যজনকে উত্তেজিত জনতা পুলিশে সোপর্দ করেন। সাংবাদিক পেশার নাম খারাপ হবে মর্মে স্থানীয় কিছু সাংবাদিকের সুপারিশে কারো কোনো অভিযোগ নাই মর্মে পুলিশ মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা থানায় লিখিত মুচলেকা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত (১৬ মার্চ ২০২৪) নাটোরে গিয়ে কয়েল নামে এক যুবলীগ নেতার কাছে চাঁদা দাবি করতে গিয়ে আটক হয় নুরজ্জামাল-সহ চারজন ভুয়া সাংবাদিক। তাদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পরে তারা বিজ্ঞ আদালতে থেকে জামিনে মুক্তি পায়।