পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে গুলিতে নিহত পাবনা পৌর আওয়ামী লীগ নেতা ছায়দার মালিথাকে হত্যার পরিকল্পনা হয় সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাউদ্দিন মালিথার বাড়িতে। হত্যার সেই মিশনের দায়িত্ব পান আলাউদ্দিনের ভাতিজা আনোয়ার আহম্মেদ স্বপন (৪২)। নির্দেশনা পেয়েই লোকজন নিয়ে নিজেই ছায়দার গুলি করে স্বপন। হত্যার মুলহোতা এই স্বপনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুনসী। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম, সদর সার্কেল মো. রোকনুজ্জামানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ গ্রামের মো. আশরাফ উদ্দিন মালিথার ছেলে আনোয়ার আহম্মেদ স্বপন (৪২), পাবনা শহরের চক ছাতিয়ানির মৃত কালাম মালিথার ছেলে মোহাম্মদ আশিক মালিথা (২৮), কাশিপুরের মো. শাজাহান খানের ছেলে মো. রিপন খান (২৭), শহরের মাটিয়সড়ক গোপালপুরের আকবার হোসেনের ছেলে মো. নুরুজ্জামান রাকিব (২৪), একই এলাকার মো. রমজান আলীর ছেলে মো. ইয়াসিন আরাফাত ইস্তি (২৬) এবং চক ছাতিয়ানির মৃত আব্দুল হাকিম মালিথার ছেলে মোহাম্মদ আলিফ মালিথা (২২)।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে জেলা পুলিশ, সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে কক্সবাজার, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার বিভিন্ন স্থান থেকে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বিদেশি পিস্তল, গুলি, টিপ চাকু, ২ মোটরসাইকেল ও ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম জানান, চাচাতো ভাই সাইদার মালিথার বিরোধ ছিল জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা। নির্বাচন পরবর্তীতে সেই বিরোধ কঠোর রুপ ধারণ করে। তাদের মধ্যে একাধিকবার ছোটখাটো মারামারির ঘটনাও ঘটে। এই বিরোধে সাইদারকে জীবনের মতো শেষ করার পরিকল্পনা হেমায়েতপুরের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চেয়ারম্যানের বাড়িতে বৈঠক হয়। এবং হত্যাকান্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আসামিরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া হবে। এছাড়াও হত্যাকান্ডোর নেপথ্যের কারিগর আলাউদ্দিন চেয়ারম্যানকে খুব শিগগিরিই গ্রেফতার করা হবে বলেও জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর একটার দিকে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা (৫০)। এসময় ৬-৭ জন সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ধলে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত সাইদার হেমায়েতপুরের চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়ার মৃত হারান মালিথার ছেলে। তিনি পাবনা পৌর শাখা আওয়ামী লীগের কার্যকরি সদস্য।