সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারীদের হামলায় বিজিবির ২সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এঘটনায় অভিযান চালিয়ে ২ চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করাসহ তাদের পাঁচারকৃত রসুন জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও পৃথক অভিযান চালিয়ে ইয়াবা, গাঁজা, প্রাইভেট কার, মোবাইল ও বিভিন্ন মামলার আসামীসহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- সোমবার (২ ডিসেম্ভর) রাত ৮টা থেকে জেলার দোয়ারা বাজার উপজেলার বাংলা বাজার, পাশের বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি, মাছিমপুর ও তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় জাদুকাটা নদী, চানপুর সীমান্তের বারেকটিলা ও টেকেরঘাট সীমান্তের নীলাদ্রী লেকপাড়,পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা দিয়ে পৃথক ভাবে সীমান্ত কিংখ্যাত সোর্স পরিচয়ধারীরা চোরাকারবারীদের নিয়ে কয়লা, পাথর, মাদকদ্রব্য, বিড়ি ও চিনি পাঁচার করাসহ দেশীয় রসুন ভারতে পাঁচার শুরু করে। এমতাবস্থায় রাত ১টায় ভারতে পাঁচারের সময় বাংলা বাজার সীমান্তে বিজিবি অভিযান চালিয়ে রসুন জব্দ করে। ওই সময় বাংলা বাজার ক্যাম্পের টহলে থাকা বিজিবি সদস্যদের কাছ থেকে জব্দকৃত রসুন ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা হামলা চালায়। এঘটনায় বিজিবির ২জন সদস্য আহত হয়। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে ২ চোরকারবারীকে গ্রেফতার করে থানায় হস্থান্তর করা হয়। সম্প্রতি তাহিরপুরের বালিয়াঘাট সীমান্তে পাচারকৃত কয়লা জব্দ করলে বিজিবি কমান্ডার জাফরের ওপর হামলা করে আহত করে সোসরা, তার আগে লাউড়গড় সীমান্তে কয়লা ও পাথর পাঁচার নিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী ও বিজিবির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এছাড়া এই সীমান্তের ১২০৩এর ৩এস পিলার সংলগ্ন ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোষ্টের সামনে দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৩-৪শ লোক দিয়ে লাখলাখ টাকার পাথর পাচার করে বিজিবি ক্যাম্প ও লাউড়গড় বাজারের চারপাশে মজুত করে ওপেন বিক্রি করাসহ জাদুকাটা নদী দিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে শতশত বারকি নৌকা বোঝাই করে রাতভর লাখলাখ টাকার কয়লা ও পাথরসহ মাদকদ্রব্য ও বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করা হয়। অন্যদিকে বডার বাজার ও কবিরের বাড়ির সামনে দিয়ে সোর্সরা ফুছকা,টমেটো,জিরা,কাজু বাদাম ও কসমেটিসক পাচাঁর নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া পাশের চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার আনন্দপুর ও ১২০৩পিলার দিয়ে প্রতিরাতে মদ, গাঁজা, ইয়াবা, চিনি, ফুছকা, কম্বল, কমলা, ঘোড়াসহ বিভিন্ন মালামাল পাচার হয়। টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে ওপেন কয়লা ও চুনাপাথরসহ মদ পাচাঁর হয়। র্যাব ও ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক ও অস্ত্রসহ অনেককে গ্রেফতার করেছে। তাই সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ বাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
অন্যদিকে গত রবিবার (১লা ডিসেম্ভর) রাতে দোয়ারা বাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী আঙ্গুর মিয়া (৪৩) কে ৪শ পিস ইয়াবাসহ তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। উদ্ধার করা হয় মাদক বিক্রির ১১হাজার ২২০টাকাসহ ২টি মোবাইল। সে সোর্সদের মাধ্যমে সবাইকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবত মাদক পাঁচার করাসহ ব্যবসা করতো বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। অপরদিকে জগন্নাথপুরে পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১কেজি গাঁজা ও ১টি প্রাইভেট কারসহ মাদক ব্যবসায়ী মাহবুর হোসেন (২২),তার সহযোগী বাবলু মিয়া (২০),তামিম আহমদ (১৯) কে গ্রেফতার করাসহ টমটম চুরির মামলার আসামী সুরুজ মিয়া (৩৯) ও তার সহযোগী জাহিদ আহমদ (১৭) গ্রেফতার করা হয়।
এব্যাপারে সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান, ছাতক সেনা ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন শোয়েব বীন আহমদ ও জগন্নাথপুর থানার ওসি মোখলেছুর রহমান আখন্দ সাংবাদিকদের জানান- বিজিবির ওপর হামলাকারী ২ চোরাকারবারীসহ গ্রেফতারকৃত ৮জনকে পৃথক ভাবে আদালতের মাধ্যমে কারাঘারে পাঠানো হয়েছে, সকল প্রকার অপরাধ দমনের জন্য এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।