১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৩১:৩০ অপরাহ্ন


খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠালে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'খেলা পরিবর্তন' হতে পারে
মিনারা হেলেন ইতি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৮-২০২২
খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠালে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'খেলা পরিবর্তন' হতে পারে খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠালে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'খেলা পরিবর্তন' হতে পারে


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত খুনী রাশেদ চৌধুরীকে বিচারের মুখোমুখি করতে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘খেলা পরিবর্তন’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীরবিক্রম। তিনি খুনী রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত জন্য মার্কিন সরকারের আন্তরিক সহযোগিতাও কামনা করেন। 

জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালনের অংশ হিসেবে সোমবার (১৫ই আগস্ট) বিকেলে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিকে নির্বাসন: বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী ইস্যু’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনির যুক্তরাষ্ট্রে অব্যাহত অবস্থান দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক, এবং রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যর্পণ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘খেলা পরিবর্তন’ হবে বলে মত প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সেমিনার আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে বঙ্গবন্ধুর জঘন্য খুনিকে প্রত্যর্পণের জরুরি প্রয়োজন সম্পর্কে মার্কিন জনগন এবং বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রবাসীদের মধ্যে বৃহত্তর সচেতনতা তৈরি করা।

অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির তার মূল প্রবন্ধে বলেন, খুনি রাশেদ চৌধুরী তিন শিশু, দুই গর্ভবতী নারী ও অন্যান্য নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। তিনি অবিলম্বে রাশেদ চৌধুরীকে আটক ও প্রত্যর্পণের জন্য মার্কিন সরকারের কাছে দাবি জানান।

ডেপুটি চীফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার সেমিনারে সঞ্চালনা করেন। বিশিষ্ট অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, বিশিষ্ট কোরিওগ্রাফার ও নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, প্রখ্যাত সংবাদ পাঠক সরকার কবির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন চৌধুরী, দূতাবাসের কাউন্সেলর আরিফা রহমান রুমা এবং মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল আজম আজাদ প্রমুখ সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞে নির্মমভাবে নিহত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করে।

রাষ্ট্রদূত মোঃ শহিদুল ইসলাম কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।

অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল রাষ্ট্রদূত কর্তৃক জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং  বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন। ১৭ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রতিরক্ষা অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলাম, মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-১) দেওয়ান আলী আশরাফ এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-২) মোঃ রাশেদুজ্জামান।

কাউন্সেলর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং কাউন্সেলর ও হেড অব চ্যান্সারি মোঃ মাহমুদুল ইসলাম যথাক্রমে বিকেল ও সকালের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।