২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:২৩:৫২ অপরাহ্ন


সুনামগঞ্জে মা-বাবা ও ৩ সন্তানসহ ৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৪-২০২২
সুনামগঞ্জে মা-বাবা ও  ৩ সন্তানসহ ৬ জনের  মর্মান্তিক মৃত্যু সুনামগঞ্জে মা-বাবা ও ৩ সন্তানসহ ৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু


সুনামগঞ্জে পৃথক ঘটনায় গত ২দিনে মা-বাবা ও ৩ সন্তানসহ ৬জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মৃতরা হলো- জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক হারুন মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৫), মেয়ে মাহিমা বেগম (৪), ছেলে হোসাইন আহমদ (১), একই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সর্বা দাসের ছেলে ওয়াসিম দাস (৩০) ও শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামের মুকুল খাঁ (৫০), তার ছেলে মাসুদ খাঁ (৭)।

আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ও গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় পৃথক স্থান থেকে পুলিশ মৃতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ পৌরশহরের মল্লিকপুর এলাকায় সিলেটগামী নিলাদ্রী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ পথচারীকে চাপা দিলে তারা আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহত ৩জনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওয়াসিম দাসকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। আর অন্য ২জনকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে হঠাৎ প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় শুরু হয় জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায়। ওই সময় উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক হারুন মিয়ার বসতবাড়ির ওপর ২টি গাছ ভেঙ্গে পড়ে। এঘটনায় বসতঘরের নিচে চাপা পড়ে স্ত্রী মৌসুমী বেগম, শিশুকন্য মাহিমা বেগম ও শিশুপুত্র হোসাইন আহমদ গুরুতর আহত হয়। এঘটনার খবর পেয়ে সকাল ৯টায় স্থানীয়রা তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মা, মেয়ে ও ছেলেকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।

এব্যাপারে উপজেলার পাটলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া বলেন- একটি বেসরকারী স্কুলে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন হারুন মিয়া। তিনি খুবই গরীব মানুষ। কিন্তু ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ওই শিক্ষকের পরিবারটাকে ধ্বংস করে দিয়েগেছে। সবকিছু হারিয়ে স্কুল শিক্ষক হারুন মিয়া এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন।

অন্যদিকে একই দিন সকাল অনুমান ৭টায় জেলার শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামে নিজ বসতবাড়ির পাশে অবস্থিত জমিতে মুকুল খাঁ তার দুই ছেলে মাসুদ খাঁ, রিমন খাঁ ও শ্যালক পুত্র তানভীর হোসেনকে নিয়ে কৃষি কাজ করার সময় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি শুরু হয়।

ওই সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে বাবা মুকুল খাঁ ও ছেলে মাসুদ খাঁ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এঘটনায় রিমন খাঁ ও তানভীর হোসেন আহত হয়। তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পাশর্^বর্তী হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান ও শাল্লা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম পৃথক ঘটনায় ৬জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- ঘটনাস্থল থেকে মা-মেয়ে ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর সুনামগঞ্জ পৌরশহরের মল্লিকপুর ও শাল্লার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

রাজশাহীর সময় / এম আর