২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩২:৪১ অপরাহ্ন


মহাসড়কে অবাধে অবৈধ যান
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১১-২০২৪
মহাসড়কে অবাধে অবৈধ যান


ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকায় দাবড়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যান নছিমন, ভটভটি, অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে যাত্রামুড়া পর্যন্ত এসব যান চলাচল করে।
মহাসড়কে এসব যান চলাচলে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা কার্যকর করার কোনো উদ্যোগ নেই পুলিশ প্রশাসনের। ফলে প্রায়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। কাঁচপুর থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত সাতটি স্থানে মহাসড়কের ওপর গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। এসব স্ট্যান্ডে অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটি ও ব্যাটারিচালিত রিকশা রাখায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
গত শনিবার মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন, ভটভটির মতো অবৈধ যানগুলো অবাধে চলাচল করছে। মহাসড়কে হাইওয়ে ও থানা পুলিশের একাধিক গাড়ি চলাচল করলেও অবৈধ যান চলাচলে বাধা দিতে দেখা যায়নি। এসব যান উল্টো পথ ব্যবহার করেও অহরহ চলাচল করছে। যানগুলোর চালকের নেই কোনো লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ, নেই গাড়ির ফিটনেস।
তবে অটোরিকশার চালকদের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে হাইওয়ে পুলিশ ঢিলেঢালাভাবে মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করে। মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চললেও তারা কোনো প্রকার বাধা দিচ্ছে না। 
জানা যায়, ২০১৫ সালে মহাসড়কে অটোরিকশা, অটোটেম্পো, নছিমন-করিমনসহ সব ধরনের ধীরগতির যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এসব যানবাহনকে মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে উচ্চ আদালতও চলাচল বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।  এ নির্দেশনার পর কিছুদিন পুলিশ প্রশাসন এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেয়। কিন্তু এখন এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এলাকায় এসব যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। ফলে দ্রুতগতির যানবাহনকে ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত গত এক বছরে ছোট-বড় ৬২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ হারিয়েছে ১৯ জন। আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক।
সোনাখালী গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় যেতে এ মহাসড়ক ব্যবহার করতে হয়। সেখানে অটোরিকশা তাদের একমাত্র অবলম্বন। এতে মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে। 
তবে মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেন করা হলে তাদের নিরাপদে যাতায়াত করতে সুবিধা হবে বলে দাবি করেন তিনি।
মেঘনাঘাট এলাকার গঙ্গানগর গ্রামের শফিউল্লাহ বেপারি নামের অটোরিকশার যাত্রী বলেন, হাসপাতাল, বাজার, স্কুল-কলেজে যেতে এ পথই ব্যবহার করতে হয়। মহাসড়কে চলাচলে কোনো পরিবহন পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়েই অটোরিকশা বা অন্য বাহন ব্যবহার করতে হয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বলেন, অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব যান চলাচলে হাইওয়ে পুলিশ বাধা দিয়ে আসছে। মাঝেমধ্যে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু অটোরিকশা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। তবে এগুলো ধরে ধরে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ অঞ্চল) শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, মহাসড়কের ওপর যাতে অবৈধ যান চলাচল করতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।