০৭ Jul ২০২৪, রবিবার, ০৫:২১:৫৪ পূর্বাহ্ন


পাহাড় ধসে ২ রোহিঙ্গার মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৭-২০২৪
পাহাড় ধসে ২ রোহিঙ্গার মৃত্যু ছবি: সংগৃহীত


টানা ভারী বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের উখিয়ায় পৃথক পাহাড় ধসে দুই রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এছাড়া ডজনাধিক ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা ও পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতির মুখে পড়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) ভোরের দিকে রাতে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এক্সটনশনে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে বলে ক্যাম্প সূত্রের বরাতে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন।

এদিকে একাধিক স্পটে পাহাড় ধসের মাটি সড়কের ওপরে পড়ে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে বেশ কয়েক ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে সেনাবাহিনী বুলডোজার দিয়ে মাটি সরালে বেলা ১১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কক্সবাজার রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।

উখিয়া থানার ওসি শামীম জানান, ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে উখিয়ার ক্যাম্প-৪এ দু'জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন উখিয়ার ক্যাম্প-১১ এর দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২১) ও টেকনাফের লেদার মো. আলমের ছেলে মো. সিফাত (১৩)।

রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে ওসি আরো জানান, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোর রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ এর বালুখালীতে পাহাড়ের ওপরে থাকা শেল্টার ধসে পড়লে আনোয়ার হোসেন মাটিতে চাপা পড়ে মারা যায়। অপরদিকে মো. সিফাত তার মামার শেডে বেড়াতে এসে মাটি চাপা পড়ে নিহত হয়। তার বাড়ি টেকনাফের লেদা বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে।

অপরদিকে, উখিয়ার রোহিঙ্গা  ক‍্যাম্প-১ ইষ্ট ওয়েষ্ট-৩, ৪, ৬, ৭, ১১, ১২ এবং ২০ এক্সের বিভিন্ন  ব্লকে ভারী বৃষ্টির পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবং জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন ওখানের বাসিন্দারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার স্টেশনের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৪ মিলিমিটার। দিনের বেলা বৃষ্টির তীব্রতা কম হলেও মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে আবারো ভারী বর্ষণ হয়েছে। শনিবার (২৯ জুন) থেকে বুধবার (৩ জুলাই) সকাল পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৮ মিলিমিটার। দিনে বৃষ্টিপাত কম হলেও সন্ধ্যার পর থেকে রাতে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বৃষ্টিপাত। এছাড়াপাহাড় ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে চলতি বছরের ২২ জুন পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা গেছেন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মিলে ১২ জন। সেই ধারায় বুধবার ভোরের পাহাড় ধসের ঘটনায় ২ জন মারা যাওয়ায় তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আরো দীর্ঘ হতে পারে মৃত্যুর মিছিল এমনটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা সভাপতি এইচ এম এরশাদ।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে মৃত্যু এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে প্লাবণের শঙ্কা রয়েছে। জেলার নদীগুলো ঢল নামলে এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকার আগাম প্রস্তুতি নিতে ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ডিসি।