০৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার, ০৬:৩৩:৩২ অপরাহ্ন


প্রবাসিকে ব্ল্যাকমেইল করে দেড় লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ মির্জাপুর ফাঁড়ির এটিএসআই আনিছুরের বিরুদ্ধে!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৭-২০২৪
প্রবাসিকে ব্ল্যাকমেইল করে দেড় লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ মির্জাপুর ফাঁড়ির এটিএসআই  আনিছুরের বিরুদ্ধে! প্রবাসিকে ব্ল্যাকমেইল করে দেড় লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ মির্জাপুর ফাঁড়ির এটিএসআই আনিছুরের বিরুদ্ধে!


রাজশাহীতে প্রবাসিকে ডেকে বাড়িতে আটকিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে প্রায় দেড় লাখ লাখ টাকা নগদ এ্যাকাউন্ট ও বিকাশের মাধ্যমে নেওয়ার অভিযোগ এসআই আনিছুর রহমান তার স্ত্রী ও তাদের ৪জন অজ্ঞাত সহযোগী।

এটিএসআই আনিছুর রহমান, আরএমপি মতিহার থানার মির্জাপুর ফাঁড়িতে কর্মরত। সে (মির্জাপুর এলাকায় (শ্যামলের মাঠ পানির ট্যাংকির পাশে) একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার স্ত্রী সুমোনা খাতুনের বিকাশ-এবং নগদ মোবাইল নং-০১৭৩৯-২৩৯০৮০। এই নম্বরেই মূলত ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে স্বিকার করেছেন এটিএসআই অনিছুর। তবে সেই টাকা তার পাওয়া ছিলো বলে জানান।

অপরদিকে, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নাহিদ (৩০), সে মেহেরপুর জেলার ও থানার সোনাপুর গ্রামের মোঃ খোকন আলীর ছেলে। তিনি একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসি।

ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম নাহিদ জানায়, গত ২ জুলাই বিকাল ৪টায় এটিএসআই আনিছুরের স্ত্রী সুমোনা তার মোবাইল ফোন থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলে, রাজশাহীতে আসলে আমার বাড়িতে আসিস, কথা আছে। এর আগে গত ২৯ জুন ঢাকা থেকে রাজশাহীতে আসি এবং ২ জুলাই বিকাল ৪টায় এটিএসআই আনিছুরের বাড়িতে যাই। আমাকে ঘরে বসতে দেন আনিছুরের স্ত্রী সুমোনা। তার ঠিক ১০মিনিট পরে অজ্ঞাত ৩জন যুবক ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আমাকে বাঁশের লাঠি ও রুটি বানানো বেলন দিয়ে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে আরও একজন অজ্ঞাত যুবক সেই ঘরে প্রবেশ করে আমার মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় সে আমার নগদ এ্যাকাউন্টের পিন নম্বর চায়। না দেয়ার ব্যপাক মারপিট করে এবং ২লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমি তাকে পিন নম্বর দিলে সে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। তার আগে যে আজ্ঞাত ৩জন যুবক ঘরে প্রবেশ করেছিলো তারা আমার গলায় চাকু ধরে আমার নিজ মোবাইল নং-০১৮৯১-৪৮৬২৫৫ থেকে এটিএসআই আনিছুরের সহযোগীরা নগদে টাকা নিয়েছে -০১৭২১-৭৭৯৩২৯ নম্বরে ২৫,০০০/- টাকা, ০১৭১৮৫৪১০৩৮ নম্বরে ২৪,৬৫৫/- ০১৭৩৩-৭৬৪৭৩৬ নম্বরে ২৫,৩১২.৫০/- টাকা, ০১৬৮৮-৩০০৫০৭ নম্বরে-১৫,০০০/-টাকা,০১৬৮৮-৩০০৫০৭ নম্বরে একবার ২২০/-টাকা একবার ৩৬০/- টাকা। মানিব্যাগে থাকা নগদ ১২,০৫০/-টাকা ছিনিয়ে নেয়।

পরে তারা আমাকে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিল সেবন করিয়ে ভিডিও ধারণ করে। পরের দিন অর্থাৎ ৩জুলাই আমার বাড়ি থেকে আনিছুরের স্ত্রী সুমোনার এ্যাকাউন্টে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ৫০হাজার টাকা আমার বাড়ি থেকে দেয়। টাকা পেয়ে সুমোনা বলে, এই কথা কাউকে বল্লে তোর নেশা সেবন করা ভিডিও ইন্টার নেটে ছেড়ে দেব। এ সময় আমাকে পূর্ণরায় এটিএসআই আনিছুর মারপিট করে বলে এইসব ঘটনার কথা কাইকে বললে তোকে মাদক মামলা-সহ বিভিন্ন মামলায় ফাঁসাবো বলে হুমকি দেয়। 

এরপর শুক্রবার (৫ জুলাই) জুম্মার নামাজ শেষে মতিহার থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোঃ মোবারক হোসেনের অফিসে গিয়ে সকল ঘটনা খুলে বলি। তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনিছুরকে ডেকে আমাকে ফোন দিবে বলে জানান। 

শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১১টার পরে আমি থানায় যাই। ডিউটি অফিসার বলেন, ওসি স্যারের কিছু করা নাই। পুলিশ কমিশনার স্যারের কাছে বিচার দেন।

মির্জাপুর ফাঁড়ির এটিএসআই আনিছুর রহমান জানান, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নাহিদ আমার ধর্ম ভাই। আমার কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা ধার নিয়েছিলো। যাহা স্ট্যাম্পে লিখাপড়া করা আছে। আমি তাকে বাড়িতে আটকিয়ে সেই টাকাই আমার স্ত্রীর নগদ ও বিকাশ নম্বরে নিয়েছি। অজ্ঞাত চারজন যুবক আপনার বাড়িতে প্রবেশ করে মারপিট করে নগদ ও বিকালে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ ব্যপারে মির্জপুর ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মোঃ সাহাবুল ইসলাম জানান, এটিএসআই আনিছুরকে আমি বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছি। তার বক্তব্য অনুযায়ী তার পাওনা টাকা সে উদ্ধার করেছে। তাই আমার কিছু করার নাই।

জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোঃ মোবারক পারভেজ জানান, এটিএসআই আনিছুরকে ডেকেছিলাম। তার সাথে কথা হয়েছে। সে পাওনা টাকা উদ্ধার করেছে বলে স্বিকার করেছে। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় ঘরে আটকিয়ে মারপিট করে টাকা উদ্ধারের বিষয়টি জানতে চাইলে, ওসি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই।