আগেই মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বে জলছে কেনিয়া। তার ওপর ভস্মে ঘি ঢালল অতিরিক্ত করের বোঝা। কেনিয়ার প্রধান খাদ্য রুটির উপরে চাপানো হয়েছে ১৬ শতাংশ কর। এরপর থেকেই শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ। যার ফলে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠল সরকারবিরোধী আন্দোলনে। গত দিন পনেরো ধরে দেশটির পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।
উদ্বেগ বাড়ছে কেনিয়ায় থাকা ভারতীয়দের নিয়েও। বিভিন্ন শহরের প্রায় প্রতিটা রাস্তায় জ্বলছে আগুন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে সাধারণ মানুষ। এই কদিনে এখনও পর্যন্ত বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৯ জন। আহতের সংখ্যা সাড়ে তিনশোর উপরে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে, অতিরিক্ত করের বিরুদ্ধে প্রথমে শান্তিপূর্ণ মিছিলে নেমেছিলেন সকলে। প্রতিবাদীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল যুবক-যুবতী। কিন্ত্ত গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৫ জুন, কেনিয়ার সংসদে একটি বিল পাশ হয়। যা নিয়ে প্রতিবাদ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। কেনিয়া ন্যাশনাল কমিশন অন হিউম্যান রাইটস (কেএনসিএইচআর) সোমবার বিবৃতি দিয়ে জানায় এখনও পর্যন্ত বিক্ষোভের জেরে ৩৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। আহত ৩৬১। অন্যদিকে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ৬২৭ জন।
২০২২ সালে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট হন উইলিয়াম রুটো। তার পর থেকে এটাই দেশের সবচেয়ে সংকটজনক পরিস্থিতি। দিকে দিকে হওয়া সরকারবিরোধী মিছিল ও প্রাণহানি নিয়ে রবিবার বক্তব্য রাখে রুটো। তিনি বলেন, "বিক্ষোভে ১৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। কিন্ত্ত আমার হাতে তাঁদের রক্ত লেগে নেয়। আমি এই প্রাণহানির উপযুক্ত তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি।" এদিকে, সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে যেভাবে সরকারি ভবন ও জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রগুলোকে আক্রমণ করছে তার করা নিন্দা জানিয়েছে কেএনসিএইচআর।
উল্লেখ্য, জুন মাসের মাঝামাঝি করে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে। গত ২৫ জুন বিক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠেছিল কেনিয়ার সংসদ। সংসদের একাংশে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবাদীদের একটা অংশ প্রবেশ করে সংসদে। তারাই আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিন প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান থেকে জল ছুডে় প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্ত্ত তাতেও বিক্ষোভ প্রশমিত না হওয়ায় গুলি চালানো শুরু হয়। মৃতু্য হয় পাঁচ জনের।
এদিকে, এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে কেনিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক্স হ্যান্ডলে সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, 'বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, কেনিয়ার সমস্ত ভারতীয়কে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার, অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত না করার এবং পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভের কেন্দ্র হয়ে ওঠা এলাকাগুলো এডি়য়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে সেদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য।