২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৭:০৯:৩৭ অপরাহ্ন


কোরআন অবমাননা! থানা থেকে টেনে-হিঁচড়ে ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২৪
কোরআন অবমাননা! থানা থেকে টেনে-হিঁচড়ে ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন ফাইল ফটো


কোরআন অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন এবং তার দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া বৃহস্পতিবার এই নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে।

মাদায়ানে কোরআন অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়েছিল প্রায় ২০ জন। পরে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে লোকজনের হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। বিক্ষুব্ধ জনতা মসজিদ থেকে ঘোষণা দিয়ে ভিড় জমায়। কিছুক্ষণের মধ্যে, জনতা থানা ঘেরাও করে, থানায় আক্রমণ করে, লোকটিকে পুলিশ হেফাজত থেকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং তাকে পিটিয়ে খুন করে।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, পুলিশ ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নেওয়ার পর মসজিদের মাইক থেকে লোকজনকে জড়ো হতে বলা হয়। কোরআন অবমাননার খবর জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা থানায় পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়।

সোয়াত জেলা পুলিশ অফিসার (ডিপিও) জাহিদুল্লাহ বলেছেন যে, মৃত ব্যক্তি শিয়ালকোটের বাসিন্দা এবং ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদায়ান তহসিলে পবিত্র কোরআনের কিছু পৃষ্ঠা পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে, তারপরে কিছু লোক তাকে ধরে ফেললে তার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর জনতা থানা ঘেরাও করে এবং পুলিশও ভিড় নিয়ন্ত্রণে শূন্যে গুলি ছুঁড়লেও পুলিশ এত বড় ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশ স্টেশনে পাথর ছুঁড়ে, আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লোকটিকে মারধর করে বাইরে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর উত্তেজিত জনতা তার শরীরে আগুনও ধরিয়ে দেয়।

জনতা লাঠি দিয়ে লোকটিকে তার মৃত্যু পর্যন্ত বেধড়ক পেটায়। তার মৃত্যুর পরও জনতা থামেনি এবং তারা ওই ব্যক্তির শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে এবং পাকিস্তানের অনেকেই এর নিন্দা জানিয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে জরুরি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

খবরে অনুযায়ী, ভিড় এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল যে পুলিশকেও প্রাণ বাঁচাতে পালাতে হয়েছিল এবং জনতা থানাতেও আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে ব্লাসফেমি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়, যেখানে প্রমাণ ছাড়া নিছক অভিযোগ জনতার মধ্যে ক্ষোভ উস্কে দেয় এবং সহিংসতার সম্ভাবনা থাকে। পুলিশ জানায়, মে মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানের পূর্ব পাঞ্জাব এলাকায় কোরআনের পাতা পোড়ানোর অভিযোগে এক খ্রিস্টান ব্যক্তিকেও পিটিয়ে খুন করা হয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কোরআন অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত একজন মুসলিম ব্যক্তিকেও জনতা খুন করেছিল।