দেশে চলমান ডলার সংকটে ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।
ডলার সংকটের ফলে অনেক ব্যাংক ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছে না। অন্যদিকে, জরুরি পণ্য আমদানি অব্যাহত রাখতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে কমছে রিজার্ভের পরিমাণও। এবার রিজার্ভ কমে ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে রিজার্ভের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি গ্রস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলারে এসেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ ম্যাথোডের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক মাসে রিজার্ভ কমেছে ১৯১ কোটি ডলার।
তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের শর্তানুযায়ী (বিপিএম-৬ ম্যাথড) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়; কিন্তু প্রকাশ করা হয় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসেবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে। প্রতি মাসে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য।
সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে।
এদিকে বাড়তে শুরু করেছে প্রবাসী আয়। চলতি বছরের প্রথম মাসের পুরো সময়ে ২০১ কোটি ডলার বা ২ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২২ হাজার ১১০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা)। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনার উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এর সঙ্গে বাড়তি প্রণোদনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও উৎসাহিত করছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।