২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:২০:০৩ পূর্বাহ্ন


পানিফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনেনিন
ফারহানা জেরিন এলমা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৩-২০২২
পানিফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনেনিন ফাইল ফটো


পানিতে জন্মে বলে এর নাম পানিফল। এটি গ্রাম-বাংলার খুবই পরিচিত একটি ফল। বিল এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ফলে। বর্তমানে পানিফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে পানিফল। এই ফলটি দেখতে তেমন সুন্দর নয়, তবে এর পুষ্টিগুণ অনেক।

পানিফল এর ইংরেজি নাম Water chestnut, উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম Trapa bispinosa। এটি একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, ফিলিপাইন ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে পানিফলের আবাদ হয়। প্রায় ৩ হাজার বছর আগে থেকেই চীন দেশে পানিফলের চাষ হয়ে আসছে।

পানিফল দেখতে সিঙ্গাড়ার মতো তিন কোণাকার। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পানিফল পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে। ফলের রঙ লাল, নীলাভ সবুজ বা কালচে সবুজ। পুরু নরম খোসা ছাড়ালেই পাওয়া যায় হৃত্‍পিণ্ডকার বা ত্রিভূজাকৃতির নরম সাদা শাঁস। এই নরম শাঁস খেতে বেশ মজা। রসাল ও মিষ্টি মিষ্টি ভাব।

পুষ্টিমানের বিবেচনায় পানিফল খাদ্য শক্তি আছে ৬৫ কিলোক্যালরি, জলীয় অংশ ৮৪.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৯ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১.৬ গ্রাম, আমিষ ২.৫ গ্রাম, চর্বি ০.৯ গ্রাম, শর্করা ১১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৫ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন সি ১৫ মিলিগ্রাম।

পানিফল শুধু খাদ্যগুণই নয় রয়েছে ঔষধি গুণও। এবার তা জেনে নেওয়া যাক. পানিফল শাঁস শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত পা ফোলা রোগ কমে যায়। উদরাময় ও তলপেটে ব্যথায় পানিফল খুবই উপকারী। বিছাপোকা অন্যান্য পোকায় কামড় দিলে যদি জ্বালা পোড়া হয় তবে ক্ষতস্থানে কাঁচা পানিফল পিষে বা বেঁটে লাগালে দ্রুত ব্যথা দূর হয়। কাঁচা পানিফল বলকারক, দুর্বল ও অসুস্থ মানুষের জন্য সহজপাচ্য খাবার। পানিফল শর্করা ও প্রোটিন আছে যথেষ্ট। শাঁস শুকিয়ে রেখে খাওয়া যায়।

* পানিফলের শাঁস শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত পা ফোলা রোগ কমে যায়। উদরাময় ও তলপেটে ব্যথায় পানিফল খুবই উপকারী। এছাড়া উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে সহায়তা করে পানিফল।

* শরীর ঠাণ্ডা করতে পানিফল জুড়ি নেই। শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে পানিফল। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর পানিফল। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল গুণ রয়েছে এই ফলের। এমনকি অ্যান্টিক্যান্সার হিসেবেও কাজ করে পানিফল।

* বমিভাব, হজমের সমস্যা দূর করতে পানিফলের জুড়ি নেই। অনিদ্রা, দুর্বলতা দূর করতে কাজে দেয় এই ফল। পানিফল ঠাণ্ডা লাগা, সর্দিতেও স্বস্তি দিতে পারে।

* ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যানিমিয়া কমাতে পারে এই ফল। পটাশিয়াম থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে পানিফল।

* ত্বক উজ্জ্বল আর সতেজ রাখতেও পানিফল অনবদ্য। পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই ভরপুর পানিফল চুল ভালো রাখে।

* পানিফল প্রস্রাববর্ধক, শোথনাশক ও রুচিবর্ধক।

দীর্ঘকাল থেকে পানিফল ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

রাজশাহীর সময় /এইচ