১৭ মে ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:৩৪:৪২ পূর্বাহ্ন


খাওয়ার স্যালাইনের বিকল্প আর কী কী খাবেন
ফারহানা জেরিন
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৯-২০২৩
খাওয়ার স্যালাইনের বিকল্প আর কী কী খাবেন ছবি: সংগৃহীত


ডায়রিয়া ও কলেরায় জলশূন্যতা ঠেকাতে দারুণ কার্যকর এক উপায় খাওয়ার স্যালাইন। আরও অনেক ক্ষেত্রেও খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবহার আছে। প্রচুর বমি, ঘাম, ডায়রিয়া হলে অনেক জল ও লবণ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ফলে দেহে দেখা দেয় জলশূন্যতা। এ অবস্থায় খাওয়ার স্যালাইন খেলে জল ও লবণ উভয়ের ঘাটতিই পূরণ হয়।

স্যালাইনে থাকা গ্লুকোজ বা চিনি শরীরে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে। কিন্তু অনেকে স্যালাইন মেশানো জল খেতে পারেন না, বিশেষ করে শিশুরা। কেউ যদি স্যালাইন খেতে না পারে, তখন তাদের বিকল্প কিছু খাবার দেওয়া হয়, যা দিয়ে স্যালাইনের অভাব পূরণ হবে। তেমন কিছু খাবার সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক-

ডাবের জল: ডাবের জল শরীরে প্রবেশ করা মাত্র জলর ঘাটতি মেটাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশন ডায়রিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের জল। চিড়া জল

চিড়া জল ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উত্‍স। ডায়রিয়া ও আমাশয়ে চিড়া ভেজানো জল খুবই উপকারী। চিড়া ভেজালে প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। ১০০ গ্রাম চিড়ায় আছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা ও ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে বলে অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে উপকারী। খাওয়ার আগে চিড়া বিশুদ্ধ জলতে ধুয়ে নিন। তিনবার ধোয়ার পর আবার কিছুটা জলতে ভিজিয়ে নিন। এরপর স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে চটকে পরিবেশন করুন। স্যালাইন না খেলেও চলবে।

ভাতের মাড়: ভাতের মাড়ে রয়েছে হরেক রকমের পুষ্টি উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই রয়েছে। এতে শর্করা, আয়রন, ফসফরাস এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গবেষণা জানাচ্ছে, ভাতের মাড়ে ১০ গুণ লোহা, ৪ গুণ ক্যালসিয়াম, ১২ গুণ ম্যাঙ্গানিজ, ৪ গুণ তামা এবং ২ গুণ মেলানিয়াম রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে টোকোট্রিনল এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান। তাই অল্প হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে খেলে শরীরের জলশূন্যতা রোধ হবে।

কাঁচকলার স্যুপ: কাঁচকলায় রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফেট। এতে কার্বোহাইড্রেট কমপ্লেক্স স্টার্চ হিসেবে থাকে। কাঁচকলার ভিটামিন বি৬ রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৪ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্য রোগীর পথ্য হিসেবে কাঁচকলা পরিচিত। কাঁচকলা পেটের ভেতরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর করে।

আঁশযুক্ত সবজি হওয়ায় এটি খুব সহজে হজমযোগ্য। তা ছাড়া কাঁচকলায় থাকা এনজাইম ডায়রিয়া এবং পেটের নানা সংক্রমণ দূর করে।

পিংক সল্ট: এই লবণ হিমালয় পর্বত থেকে তৈরি হয়। উত্‍পাদিত অঞ্চলে লবণটি হোয়াইট গোল্ড নামে সুপরিচিত। হিমালয়ান সল্ট প্রধানত সোডিয়াম ক্লোরাইড নিয়ে গঠিত। তবে এতে সালফেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, আয়োডিন, ফ্লোরাইডসহ প্রায় ৮০টির মতো উপাদান থাকে। এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো মানুষের শরীরের কোষে খুব সহজেই শোষিত হতে পারে। তবে সাধারণ লবণের তুলনায় কম সোডিয়াম থাকলেও এতে ৯৮ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে। যেমন সিকি চা-চামচে ৫৭৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। তবে দৈনিক ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পিংক সল্ট খেতে হবে চিকিত্‍সক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী। মাল্টা বা কমলার রসের সঙ্গে এক চিমটি পিংক সল্ট মিশিয়ে খেতে পারেন।