বয়স বাড়ার সঙ্গে কানে শোনার ক্ষমতা কমা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। বয়স বাড়লে ভিতরের কান এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত স্নায়ুপথের ক্ষয় ঘটতে থাকে। তবে বার্ধক্যই শ্রবণশক্তি হ্রাসের একমাত্র কারণ নয়। অবাক লাগলেও এটা সত্য যে ঘন ঘন পেইনকিলার খেলে অকালেই হারাতে পারেন শ্রবণশক্তি।
আজকাল অনেকেই স্বাভাবিক মাথাব্যথা এবং পেট ব্যথা চটজলদি কমাতে পেইনকিলার খেয়ে নেন। পেইনকিলার তাত্ক্ষণিক উপশম ঘটায় ঠিকই, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা আপনার শোনার ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।
চিকিত্সকদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট ব্যথানাশকসহ অনেক ওষুধ আমাদের ভেতরের কান বা শ্রবণ স্নায়ুর জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই পেইনকিলারগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শোনার ক্ষমতাকে খর্ব করতে থাকে। ওষুধের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস সেই ওষুধের ডোজ এবং এক্সপোজারের সময়কালের উপর নির্ভর করে।
আমেরিকান জার্নাল অফ এপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত হার্ভার্ড গবেষণায় বলা হয়েছে যে ব্যথা উপশমকারী ওষুধ আমাদের ভিতরের কানের শামুক-আকৃতির শ্রবণ যন্ত্র ককলিয়ার ক্ষতি করতে পারে। গবেষকদের দাবি, আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধগুলি ককলিয়াতে রক্ত প্রবাহ কমাতে পারে যার ফলস্বরূপ কোষের ক্ষতি বা কোষের মৃত্যু ঘটে।
অন্যদিকে, হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মেডিসিন প্রশিক্ষক ডঃ শ্যারন কুরহানের দাবি, অ্যাসিটামিনোফেন খাওয়ার ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্লুটাথিয়ন কমে যেতে পারে, এই গ্লুটাথিয়ন ককলিয়াকে ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে মহিলারা সপ্তাহে কমপক্ষে দু'বার পেইনকিলার খান তাদের শ্রবণ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ঘন ঘন ব্যবহার করলে এই ঝুঁকি ২৪% পর্যন্ত বাড়তে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও ফলাফল খানিক একই। অ্যাসপিরিন সবচেয়ে বেশি শ্রবণশক্তি হ্রাস করে বলেও জানা গিয়েছে।
ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় পেইনকিলার, তবে চিকিত্সকদের পরামর্শ নিয়েই তা খাওয়া উচিত। মাথাব্যথার জন্য পেইনকিলারের উপর নির্ভর করলে তা আরেক ব্যথার কারণ হতে পারে। এই অবস্থায়, রোগী নিয়মিত পেইনকিলার খেলেও ওষুধ আর কাজ করে না, ফলে প্রতিদিন মাথাব্যথা হতে থাকে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ