উচ্চতা খানিকটা বংশের ওপরও নির্ভর করে। যাদের জিনেই লম্বা হওয়ার রসদ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে আলাদা বিষয়। কিন্তু যাদের তাতে খামতি রয়েছে, তাদের তো কসরত করতে হবেই। নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত আমাদের উচ্চতা বাড়ে, তারপর তা বন্ধ হয়ে যায়।
সাধারণত আমাদের ধারণা ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে উচ্চতা বাড়ে, তারপর আর উচ্চতা বাড়ে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্বাভাবিকভাবেই ১৮ বছরের পরও রয়েছে লম্বা হওয়ার সুযোগ। তবে তার জন্য অবশ্যই কসরত করতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলে বয়ঃসন্ধি কালে উচ্চতা বাড়ানোর বেশ কিছু উপায় দেওয়া হল -
ব্যালেন্স ডায়েট: আমাদের সামগ্রিক বিকাশের ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর ডায়েট। ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার শরীরের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমকে ঠিকমতো কাজ করতে সহায়তা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। তাই আপনার ডায়েটে তাজা ফল, শাকসবজি, মাছ, গোটা শস্য এবং দুগ্ধজাত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলি হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং শারীরিক গ্রোথ ভালো হয়। হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধির দু'টি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি হল ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি।
ব্যায়াম: ব্যায়ামের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রতিদিন কিছুটা সময় শরীরচর্চা বা ব্যায়াম আমাদের সুস্থ ও ফিট থাকতে সহায়তা করে, রোগ-ব্যাধি দূরে রাখে, পেশী ও হাড়কে শক্তিশালী করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং সারাদিন অ্যাক্টিভ রাখে। এছাড়াও, ব্যায়াম আমাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায়ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার উচ্চতা কয়েক ইঞ্চি বাড়তে পারে।
শারীরিক ভঙ্গি ঠিক রাখুন: শরীরের সঠিক ভঙ্গি আপনার উচ্চতা কয়েক ইঞ্চি বেশি দেখাতে সাহায্য করে। কুঁজো হয়ে থাকা, টেক্সট নেক এবং বাঁকা মেরুদণ্ডের কারণে, আপনার প্রকৃত উচ্চতার থেকে কয়েক ইঞ্চি খাটো দেখায়। আপনি যদি ঠিক সময় আপনার শারীরিক ভঙ্গি সংশোধন না করেন, তাহলে একটা সময় পরে আপনার শারীরিক ভঙ্গি এরকমই হয়ে থেকে যাবে। ঘাড়, কোমর ও পিঠে মারাত্মক ব্যথাও শুরু হবে।
তাই ল্যাপটপে কাজ করার সময় ও মোবাইল দেখার মাঝে একটু বিরতি নিন এবং আপনার শারীরিক ভঙ্গি চেক করে নিন। আর যদি আপনাকে দিনের বেশিরভাগ সময়ই ল্যাপটপের সামনে বসে থাকতে হয়, তাহলে দেহের ভঙ্গি ঠিক করার জন্য আপনার পিঠে বালিশ রাখতে পারেন। এছাড়াও, নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: মাঝে মাঝে কম ঘুমোলে আপনার বৃদ্ধিতে ততটাও প্রভাব পড়বে না। তবে এটা দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হলে আপনার উচ্চতার উপর প্রভাব পড়বে। আমরা যখন ঘুমোই তখন শরীরে হিউম্যান গ্রোথ হরমোন (HGH) নিঃসরণ হয়। কিন্তু দিনের পর দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমালে এই হরমোন উত্পাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। তাই, ফিট এবং সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুম যত ভালো হয়, গ্রোথও তত ভালো হবে।
সাপ্লিমেন্টস: আমরা যে খাবার খাই তা হল ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রাথমিক উত্স, যা আমাদের বেড়ে উঠতে এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু কখনও কখনও খাবার আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে না। তাই পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা মেটাতে আপনি ডায়েটে সাপ্লিমেন্ট যোগ করতে পারেন। সাপ্লিমেন্টস উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টস নিন।
রাজশাহীর সময় /এএইচ