যুদ্ধের চতুর্থ দিন। ইউক্রেনের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, তিনটি বাচ্চাসমেত মোট ১৯৮ জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত ১১০০-র বেশি। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছে। কিন্তু শক্তিশালী রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে ইউক্রেনে বাঁচাতে সেখানকার সাধারণ মানুষ এবার অস্ত্র তুলে নিয়েছেন।
ইউক্রেনে বহু মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন।তবে কিছু মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে বেশ কিছু ছবি। রাশিয়ার সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে শিশু পর্যন্ত অস্ত্র তুলে নিয়েছে দেশকে বাঁচাতে। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইউক্রেনের মহিলা সাংসদ কিরা রুডিক অস্ত্র তুলে নিয়েছেন।
টুইটারে ছবি শেয়ার করে কিরা রুদিক লিখেছেন, আমি বন্দুক চালানো শিখছি। এখন দেশকে বাঁচাতে অস্ত্র হাতে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি লিখেছেন, সব দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। কারণ কিছু দিন আগে পর্যন্ত আমি এসব হবে বলে ভাবিনি।
ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে, কিরা বলেছিলেন, আমি কখনই ভাবিনি যে আমাকেও কখনও অস্ত্র ধরতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অস্ত্র নেওয়ার বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। আমরা অন্যের জমি দখলের জন্য অস্ত্র হাতে নিইনি, বরং এটা আমাদের জমি ও নিজেদের রক্ষার জন্য।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি রাশিয়ার সামরিক শক্তির সামনে দুর্বল হয়ে পড়েননি। তিনি দেশের নাগরিকদের দেশ রক্ষার জন্য অস্ত্র হাতে নিতে বলেছিলেন। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার পরও দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা রয়েছে এখনও।
রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ইউক্রেন এখন নাগরিকদের কাছে মেশিনগান পৌঁছে দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী কিয়েভকে নিরাপদ রাখতে ইউক্রেন সরকার সাধারণ মানুষকে প্রায় ১৮,০০০ মেশিনগান দিয়েছে। এর পাশাপাশি ইউক্রেন এখন ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ইউক্রেন থেকে আসা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেখানকার ছেলে-মেয়েরা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বন্দুক ও যুদ্ধের অনুশীলন করছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভকে রক্ষা করতে সাধারণ জনগণকে ১৮ হাজার মেশিনগান দেওয়া হয়েছে। কিয়েভের মেয়র বলেছেন, এখন স্থানীয় জনগণও রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত। সরকার জনগণের কাছে অস্ত্র বিতরণ করেছে। হামলার পর থেকে ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে অস্ত্র কেনার প্রতিযোগিতা চলছে। গত বেশ কয়েকদিন ধরেই কিয়েভের দোকানগুলোতে অস্ত্র কেনার জন্য লম্বা লাইন।
রাজশাহীর সময় / এম জি