২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৩৩:৪৮ অপরাহ্ন


ধুমপানে মস্তিষ্কে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ে !
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৬-২০২৩
ধুমপানে মস্তিষ্কে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ে ! ধুমপানে মস্তিষ্কে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ে !


সারা বিশ্বেই অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হার বাড়ছে। আর এর জন্য দায়ী ধূমপান। আসলে সিগারেটের মধ্যে উপস্থিত থাকে কার্সিনোজেনিক বা ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান। ফুসফুস, কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম-সহ সর্বোপরি স্বাস্থ্যের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব থাকে। আর এই বিষয়গুলি তো সর্বজনবিদিত। অথচ প্রশ্ন হচ্ছে, মস্তিষ্কের উপর কি ধূমপানের কোনও প্রভাব পড়ে? আসলে এই প্রশ্ন মাথায় এলেও কখনও এনিয়ে আলোচনা করা হয় না। আজ এই প্রসঙ্গে আলোচনা করছেন হেব্বাল ও মিলার্স রোডের মনিপাল হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট কনসালট্যান্ট ডা. অনিল আর।

হেব্বাল ও মিলার্স রোডের মনিপাল হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট কনসালট্যান্ট ডা. অনিল আর।হেব্বাল ও মিলার্স রোডের মনিপাল হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট কনসালট্যান্ট ডা. অনিল আর তিনি জানাচ্ছেন যে, ধূমপানের কারণে মস্তিষ্ক সঙ্কুচিত হতে থাকে। ফলে মস্তিষ্কের ঘনত্ব কমে এবং মস্তিষ্ক অকালেই বুড়িয়ে যায়। আর সবথেকে বড় কথা হল, এই বিষয়টা সম্পর্কে কেউই তেমন অবগত নন। আসলে আমাদের মস্তিষ্কের তিনটি প্রধান অংশ থাকে। যার নাম সেরিব্রাম (বা সেরিব্রাল কর্টেক্স), সেরিবেলাম এবং ব্রেনস্টেম (বা মেড্যুলা)। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ধূমপানের সময় ক্ষতিকর রাসায়নিক বিশেষ করে নিকোটিন মস্তিষ্কের সর্বত্র ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

যাঁরা প্রচণ্ড পরিমাণে ধূমপান করেন, তাঁদের সেরিব্রাল কর্টেক্সে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ফলে মস্তিষ্কের ধূসর উপাদান পাতলা হয়ে যেতে শুরু করে। অ-ধূমপায়ীদের তুলনায় সেরিব্রামের মাপ হ্রাস পায় এবং সব মিলিয়ে মস্তিষ্কের ঘনত্বও কমে আসে। সেরিব্রাল কর্টেক্স হল মস্তিষ্কের সবথেকে বড় অংশ। আর এটা দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণ শক্তি, স্পর্শ, আবেগ অনুভূতি, শিক্ষা, যুক্তিবাদী চিন্তা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। ধূমপানের কারণে মস্তিষ্কে আচমকা পরিবর্তন আসে। যার ফলে স্মৃতিশক্তি লোপ, কাজে সমস্যা, উত্তেজনা এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। সেরিব্রাল কর্টেক্স পাতলা হয়ে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের ঘনত্ব কমে যাওয়ার সঙ্গে নিউরোডিজেনারেশনের বিষয়টা যুক্ত। এর ফলে অ্যালজাইমার্স এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে।

এখানেই শেষ নয়, অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে মস্তিষ্কে সঠিক ভাবে রক্ত সরবরাহ হয় না। এর ফলে রক্তবাহী নালীতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আর রক্ত জমাট বাঁধার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছতে পারে না। ফলে মস্তিষ্ক সঙ্কুচিত হতে শুরু করে। যাঁরা প্রচণ্ড পরিমাণে ধূমপান করেন, তাঁদের দুই উপায়ে মস্তিষ্ক সঙ্কুচিত হয়। সেইগুলি হল মস্তিষ্কের কোষে রাসায়নিকের সরাসরি প্রভাব এবং মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহে প্রভাব। সঠিক ওষুধপত্র খাওয়া এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। ধূমপায়ীরা যাতে ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন, তার জন্য সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞই।