প্রেমের প্রস্তাব না মানায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাড়ার এক যুবক।নদিয়ার তেহট্টের হোগলবেড়িয়া থানার সুন্দলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার ওই ছাত্রীকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। জনতা হামলা করে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে। সেই সঙ্গে করিমপুর-বহরমপুর রাজ্য সড়কও অবরোধ করে স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে থানায় আত্মসমর্পণ করে ব্রজেন মণ্ডল নামের ওই যুবক। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে এলাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বাহিনী নামানো হয়েছে। তারপরেও শনিবার রাত অবধি উত্তপ্ত ছিল পুরো গ্রাম।
পুলিশ জানিয়েছে, একই পাড়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রীটিকে কিছুদিন আগেই প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রজেন মণ্ডল। স্বাভাবিকভাবেই সে কথায় প্রশ্রয় দেয়নি মেয়েটি। সরাসরি প্রেম প্রস্তাব নাকচ করে দেয় সে। শনিবার সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বান্ধবীর সঙ্গে করিমপুর যাচ্ছিল টিউশনে। মাঝে চড়কতলার কাছে শুনশান রাস্তাতে মেয়েটির আসার অপেক্ষা করছিল অভিযুক্ত। এরপর সেখানে ওই ছাত্রী পৌঁছতেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্রজেন। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে বেশ কয়েকজন ছুটে আসেন। এরমধ্যেই সেখান থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত যুবক।
সবাই মিলে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই মারা যায় মেয়েটি। এদিকে এই মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসীরা। আর একদল হামলা চালায় অভিযুক্তের বাড়িতে। ভাঙচুর করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনার খবর যায় পুলিশে। কিন্তু তাঁরা আসার আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় গোটা বাড়িটি। এরপরই অবস্থা বেগতিক বুঝে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে ব্রজেন।
মৃত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে তাঁদের মেয়েকে প্রেম প্রস্তাব দিচ্ছিল ব্রজেন। কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় বড়সড় ঝামেলা হয়। থানায় অভিযোগ দায়েরও করা হয়েছিল। ভবিষ্যতে আর সে বিরক্ত করবে না, এই শর্তে বিষয়টি তখন মিটমাট করে নেওয়া হয়। কিন্তু ভিতরে ভিতরে সে তখনও রাগে ফুঁসছিল। এরপরেও সে বেশ কয়েকবার ওই তরুণীকে বিরক্ত করেছে। সবাই মিলে বুঝিয়েও কাজ হয়নি। শেষে শনিবার মেয়েটিকে মেরেই দিল ব্রজেন। অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আবেদনও জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার।