১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ০৯:২৩:১৫ অপরাহ্ন


ম্যাজিক দেখানোর নাম চোখ বেঁধে ৯ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ
সুমাইয়া তাবাস্সুম:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৫-২০২৩
ম্যাজিক দেখানোর নাম চোখ বেঁধে ৯ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ ম্যাজিক দেখানোর নাম চোখ বেঁধে ৯ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ


৫ বছর আগে নিউটাউনের বাসিন্দা ৯ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল এক কুরিয়ার এক্সিকিউটিভের বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালের সেই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসতের একটি পকসো আদালত।

ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের ৩ মে। সেদিন বিকেল ৪টে নাগাদ ৯ বছরের নাবালিকা নিউটাউনে নিজের আবাসন কমপ্লেক্সের সামনে বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিল। তার কিছুক্ষণ আগেই স্কুল থেকে ফিরেছিল সে। তার বাবা-মা সেই সময় অফিসে ছিল। খেলতে যাবে বলে বন্ধুর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল নাবালিকা।

সেই সময় সোমনাথ পাল নামে ওই ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ কয়েকটি চিঠি দেওয়ার জন্য আবাসন কমপ্লেক্সে ঢোকে। সামনেই নাবালিকাকে দেখতে পেয়ে সে ঠিকানা দেখিয়ে টাওয়ার-২ এর একটি নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে বলে তাকে। এরপর নাবালিকা তাকে সঙ্গে নিয়ে ১৪ তলার ওই ফ্ল্যাটের সামনে যায়। কিবন্তু দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে।

এরপরেই ম্যাজিক দেখানোর নাম করে নাবালিকাকে নিয়ে ফ্ল্যাটের ছাদে যায় সোমনাথ। নাবালিকার চোখ বেঁধে তাকে মেঝেতে শুইয়ে জোর করে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। নিঃগৃহীতা নাবালিকা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে সোমনাথকে। কিন্তু তার কোনও কথাতেই কান দেয়নি অভিযুক্ত। উল্টে, ঘটনার কথা কাউকে বললে ফল একেবারেই ভাল হবে না বলে নাবালিকাকে ভয় দেখায় অভিযুক্ত।

কোনও মতে তার হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে বাড়িতে ফিরে ঠাকুমাকে সব কথা খুলে বলে নাবালিকা। তারপরেই নিগৃহীতার বাবা মা বিধাননগর থানায় ওই বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। নাবালিকার দেওয়া বর্ণনা, আবাসনের রেজিস্টার এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পরেরদিনই বারাসত থেকে সোমনাথকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে পকসো আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হলেও ২০২০ সালে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত। এই ঘটনায় ১৫ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ, সিএফএসএল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সহ একাধিক ডিজিটাল প্রমাণ পেশ করা হয় আদালতে। বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, এটিই সম্ভবত প্রথম ঘটনা যেখানে মূলত ডিজিটাল সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই বিচারপ্রক্রিয়া এগোচ্ছিল। অভিযুক্তের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্য হস্তাক্ষর বিশারদদেরও সাহায্য নেওয়া হয়। এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজে সোমনাথকে নাবালিকার সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায়।

নির্যাতিতা নাবালিকার মেডিক্যাল রিপোর্টেও ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছিল। এছাড়া আবাসনের রেজিস্টার খাতাতে দেখা যায়, অভিযুক্ত সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বিকাল সোয়া ৪টার দিকে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সেখানেই থাকার প্রমাণ মিলেছে। বিচারক জানান, যা থেকে একপ্রকার স্পষ্ট যে অভিযুক্ত ইচ্ছা করেই অপরাধের অ্যালিবাই হিসেবেই ভুল সময় লিখেছিল রেজিস্টারে। সব মিলিয়েই আদালত সোমনাথ পালকে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছে।